বিএনপির সমালোচনা অহেতুক, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসূ। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে ভারতের স্থলভাগ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশের গার্মেন্টস পণ্যসহ বিনা শুল্কে পণ্য রপ্তানি করার সুযোগ। এটির জন্য বহু বছর ধরে বাংলাদেশ চেষ্টা করে এসেছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, এই ভারত সফর নিয়ে বিএনপি নানা ধরনের কথা বলেছে। এখন নিশ্চয়ই চুপসে গেছে। কিন্তু এরপরও আজকালের মধ্যে তারা আরও কিছু একটা বলবে।

চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক ন্যায্যতার ভিত্তিতে। আমাদের সরকারই ভারতের কাছ থেকে সবকিছু আদায় করেছে। ১৯৭৪ সালে ছিটমহল চুক্তি হয়েছে। সেই ছিটমহল আমাদের অধিকারে চার দশকে কেউ আনতে পারেনি। তারা কোন দেশের নাগরিক, সেটা বলতে পারত না। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ছিটমহলগুলো আমাদের অধিকারে এনেছে। সম্পর্ক যে ন্যায্যতাভিত্তিক তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে, আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের সাথে মামলা করে সমুদ্রসীমা জয়লাভ করেছি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সেটি আরও নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। তার প্রমাণ হচ্ছে ভারতের স্থলভাগ ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে শুল্কমুক্ত পণ্য রপ্তানির সুযোগ দেওয়া, মাদকসহ মাত্র ২০টি পণ্য ছাড়া সব পণ্যে ভারত আমাদের ট্যারিফ-সুবিধা দিয়েছে। যেটি বিএনপি আদায় করতে পারে নাই। খালেদা জিয়া তো ভারতে গিয়ে আমাদের গঙ্গার পানি হিস্যার কথা বলতে ভুলেই গিয়েছিলেন। সেটিও আদায় করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।’

সারা দেশে আজ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সাংবাদিকদের একটি আশা-ভরসার স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, একজন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করলে তাঁর পরিবারকে এককালীন তিন লাখ টাকা দেওয়া হয়। একজন সাংবাদিক অসুস্থ হলে তাঁকে ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। করোনাকালে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপালসহ এই উপমহাদেশের কোনো দেশে সাংবাদিকদের করোনা সহায়তা করা হয়নি। কিন্তু বাংলাদেশে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে সরকার করোনাকালীন সহায়তা হিসেবে চার হাজার সাংবাদিককে সহায়তা দিয়েছে, যা চলমান।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণের ক্ষেত্রে আমরা কখনো কে কোন দল বা মতের, সেটি দেখি না। আমি দল করি, আমি দলীয় সরকারের মন্ত্রী, কিন্তু যখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন করছি, তখন সবাইকে দুই চোখে সমভাবে দেখার চেষ্টা করি, রাষ্ট্রের সাহায্য যেন সবাই পায়।’

অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ চট্টগ্রামের ৩৬ সাংবাদিকের হাতে ৩৪ লাখ টাকার অনুদানের চেক তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিইউজে সভাপতি মোহাম্মদ আলী। সঞ্চালনা করেন সিইউজের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ। স্বাগত বক্তব্য দেন সিইউজের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি শহীদুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কলিম সরওয়ার।