চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর
চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর

ধ্বংসাত্মক রাজনীতি নির্মূল করে মানবিক রাষ্ট্র গঠনই বিজয় দিবসের প্রত্যয়: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশকে একটি মানবিক ও সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা এবং দেশ থেকে নেতিবাচক, ধ্বংসাত্মক রাজনীতি চিরতরে নির্মূল করাই বিজয় দিবসের প্রত্যয়।

আজ রোববার সকালে রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবন মিলনায়তনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধীন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর (ডিএফপি) আয়োজিত ‘বিজয়ের ৫২ বছর’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন।

জাতিগত উন্নয়নের জন্য শুধু বস্তুগত নয়, মানুষের আত্মিক উন্নয়নও অত্যন্ত প্রয়োজন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা অর্থনৈতিকভাবে এখন আর দরিদ্র নই। তবু অনেকের চেয়ে পিছিয়ে। কিন্তু সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন, মূল্যবোধে আমরা অনেকের চেয়ে এগিয়ে। পাশাপশি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা একটি সামাজিক রাষ্ট্র গঠন করার লক্ষ্যেই বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা, দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ নানা ধরনের ভাতা চালু করেছেন। এভাবে দেশকে আমরা একটি মানবিক, সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চাই, যেখানে আর্তপীড়িত, দরিদ্রদের দায়িত্ব রাষ্ট্র গ্রহণ করবে।’

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ সব প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে। এখন জিডিপিতে আমরা বিশ্বের ৩৫তম আর পিপিপিতে ৩১তম অর্থনীতির দেশ। ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ ২৫ কিংবা ২৭তম অর্থনীতির দেশে রূপান্তরিত হবে। এই উন্নয়ন অগ্রগতি আমরা আরও বহুদূর এগিয়ে নিতে পারতাম যদি দেশে ধ্বংসাত্মক, নেতিবাচক, গুজব ছড়ানোর রাজনীতি না থাকত। কারণ, এগুলো দেশের অগ্রগতিকে শ্লথ করেছে। আজকে রাজনীতির নামে মানুষ, গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো হচ্ছে, ট্রেন লাইন কেটে ফেলা হচ্ছে, ট্রেনে অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে। এগুলো কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রাজনীতির নামে এই সন্ত্রাস উন্নয়ন–অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করেছে এবং করছে। সুতরাং দেশকে যদি স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যেতে হয়, তাহলে রাজনীতির নামে এই সন্ত্রাস চিরদিনের জন্য বন্ধ করতে হবে। আমরা সেটি বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর। সুতরাং আজকে বিজয় দিবসে আমাদের প্রত্যেকের শপথ হওয়া প্রয়োজন এই নেতিবাচক, ধ্বংসাত্মক রাজনীতিকে চিরতরে দেশ থেকে নির্মূল করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে শুরুতে ডিএফপি নির্মিত ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ গীতিনাট্য চলচ্ছবি প্রদর্শন এবং আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এর আগে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের পুরোনো ভবনের দুটি তলা সংস্কার করে একটি শুটিং ফ্লোর এবং ভবনের সামনে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।

ডিএফপির মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশ নেন অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ, বিটিভির মহাপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম, প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ ও গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নিজামূল কবীর।
এরপর আজ দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রাজনীতির নামে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন হাছান মাহমুদ।

‘মিডিয়া ফর ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড পিস’ সংগঠনের ব্যানারে ‘রাজনীতির নামে জ্বালাও–পোড়াও নাশকতা বন্ধ করো, নির্বাচনই সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ’ শীর্ষক এ মানববন্ধনে জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, পত্রিকার সম্পাদকদের মধ্যে হেমায়েত উদ্দীন, হেদায়েত উল্লাহ প্রমুখ অংশ নেন।