বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

সরকারকে নির্বাচনের সময় স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন গয়েশ্বর রায়

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচনের সময়সীমা স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য কত সময় লাগবে, তা জানাতে হবে।

আজ রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী প্রচার দলের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে ‘দুর্যোগ প্রশমনে বিএনপির ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন গয়েশ্বর রায়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য কতটুকু সময় লাগবে, বলেন না কেন? সেনাবাহিনী প্রধান বলেছেন ১৮ মাস…তাঁর কথা বলেছেন বলুক। পরের দিন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটা সরকারের কথা না।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে গয়েশ্বর রায় বলেন, এখনো নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা হয়নি। ফলে নির্বাচন হবে কি না, সে বিশ্বাস কীভাবে করবেন। তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য কমিশনের পর কমিশন হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। এগুলোর মধ্য দিয়ে সময় নষ্ট হচ্ছে। এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে জনগণ ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হবে।

সংস্কার নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, এক–এগারোর সময় বিরাজনীতিকরণ বা রাজনীতিবিদদের অপসারণ করা হয়েছিল। তখন রাষ্ট্রশক্তি গ্রহণ করা সরকার সংস্কারের নামে কুসংস্কারের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে। এখনো সেই সংস্কার শব্দ ঘুরছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে গয়েশ্বর রায় আরও বলেন, ‘আপনার দায়িত্ব একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যেটুকু রিফর্ম (সংস্কার) দরকার হয় সেটুকু রিফর্মের জন্য বিবেচনা করবেন। আর আপনাদের ভাবনাগুলো আর আমাদের ভাবনাগুলো…আমরা তো ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছি…এসব সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে আগামী দিনে। জনগণের প্রতিনিধিরা পার্লামেন্টে আসবে, তারা ঐকমত্যের ভিত্তিতে সেসব সংস্কার করবে।’ তিনি এ–ও বলেন, এই সরকার ব্যর্থ হলে জাতি ব্যর্থ হবে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল ব্যর্থ হবে।

বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার না হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গয়েশ্বর রায় বলেন, এক-এগারোর সময়ে আওয়ামী লীগের সব মামলা যদি উঠে যেতে পারে, এখন কেন বিএনপির বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে না?

গয়েশ্বর রায় বলেন, ‘আপনাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা) মিথ্যা মামলার ব্যাপারে যদি আমরা সমব্যথিত হতে পারি, সোচ্চার হতে পারি; তাহলে আপনারা দায়িত্ব গ্রহণ করার পরে আমাদের মামলাগুলো আগের মতোই আছে, আমাদের আগের মতোই আদালতে যেতে হচ্ছে। এ কারণেই আমি বলেছি, সরকার বদলে গেছে; কিন্তু তুমি-আমি একই আছি, যা ছিলাম আগে।’

বাংলাদেশের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি বলেও মন্তব্য করেন গয়েশ্বর রায়। তিনি বলেন, ‘মানুষের জন্য, অধিকারের জন্য গত ১৬ বছর যারা অত্যাচারের শিকার হয়েছে, তারাই শুধু ভুক্তভোগী। বিপ্লবে সরকার পরিবর্তন ছাড়া কিছুই বদলায়নি। মাঝ থেকে শেখ হাসিনা চলে গেছে; কিন্তু সব আগের মতোই আছে।’

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রচার দলের সহসভাপতি রুহুল আমিন। জাতীয়তাবাদী প্রচার দলের সভাপতি মাহফুজ কবিরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।