বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আগামী ১ থেকে ১৫ নভেম্বর দেশব্যাপী ‘শোষণ-বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক জাগরণ যাত্রা’ করবে। আজ মঙ্গলবার সিপিবির দেওয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির চার দিনব্যাপী সভা গতকাল সোমবার ২১ অক্টোবর সন্ধ্যায় শেষ হয়। কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির এই সভায় রিপোর্ট উত্থাপন করেন রুহিন হোসেন প্রিন্স। সভায় শোক প্রস্তাব পাঠ করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মানবেন্দ্র দেব। সভায় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য-সংগঠক ও কন্ট্রোল কমিশনের সদস্যরা বক্তব্য দেন।
সভায় গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন, স্বৈরাচারী ব্যবস্থার বিলোপ, অবাধ-সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠাসহ শোষণ-বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামকে এগিয়ে নেওয়ার আহবান জানানো হয়েছে।
সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির এই সভায় আগামী ১ থেকে ১৫ নভেম্বর ‘শোষণ-বৈষম্যবিরোধী গণতান্ত্রিক জাগরণ যাত্রা’য় ঢাকাসহ সারা দেশে সভা-সমাবেশ, পদযাত্রা, গণসংযোগ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়াকে অগ্রসর করার আহবান জানিয়ে বলা হয়, সরকারের কারও কারও বক্তব্যে জনমনে নানা প্রশ্ন তৈরি করেছে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সতর্ক থেকে সরকারের মূল কার্যক্রম অগ্রসর করতে হবে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জনজীবনে পুরোপুরি শৃঙ্খলা ফিরে না আসা, সংস্কার কার্যক্রমে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দৃশ্যমান আলোচনা না হওয়ায় সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। রাজনৈতিক দলগুলো ও বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে এসব কার্যক্রম পরিচালনা ও নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
সভায় মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করা, বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলা, পাল্টা দখলদারিত্ব, কোনো কোনো ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করার বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সভায় অন্তবর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাবে সিপিবির মতামত তুলে ধরার জন্য পার্টির নেতাদের মধ্যে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সভায় আগামী ২০২৫ সালের মে মাসে সিপিবির ত্রয়োদশ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির এই সভায় সিপিবির প্রেসিডিয়ামে চারজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, রফিকুজ্জামান লায়েক, অনিরুদ্ধ দাশ অঞ্জন ও আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন।
এ ছাড়া কাজী রুহুল আমিন, এস এ রশীদ, রাগীব আহসান মুন্না, হাসান তারিক চৌধুরী, ডা. সাজেদুল হক, লুনা নূর ও আবিদ হোসেনকে কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছে।
আবুল হোসেন ও জাহিদ হোসেন খানকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং আবু হাসিবকে কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক নির্বাচিত করা হয়েছে।