চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের পুনরায় দায়িত্ব পেলেন সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও আওয়ামী লীগ নেতা মফিজুর রহমান। আজ সোমবার নগরের জিমনেসিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে তাঁদের দুজনকে আবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সম্মেলনের প্রধান বক্তা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ কমিটির বিদায়ী এই দুই নেতাকে আগের পদে বহাল রাখার ঘোষণা দেন। কমিটির বাকি সদস্যদের নাম পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।
দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোশাররফ হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান সঞ্চালনা করেন। এই সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, দলের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী, নজরুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দীন নদভী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘যাঁরা দক্ষিণ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে আগ্রহী, তাঁদের নাম আমরা সংগ্রহ করেছি। আলাপ–আলোচনা হয়েছে। আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনার সদয় অনুমতি নিয়ে আগামী তিন বছরের জন্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করছি। সভাপতি হিসেবে মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মফিজুর রহমানের নাম ঘোষণা করছি। তাঁরা এক হয়ে কাজ করবেন এবং আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবেন।’
সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১০ ডিসেম্বরের (বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হয়েছে) খেলায় আমরা জিতে গেছি। খেলা হবে, নির্বাচনেই ফাইনাল খেলা হবে। নির্বাচন হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে। দুর্নীতিবাজ তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে খেলা হবে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল আবারও সরকার গঠন করবে।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপির সাত সংসদ সদস্য পদত্যাগ করলে সরকার পতন হয় না। ৩৫০ জন সদস্য নিয়ে সরকার গঠিত হয়েছে। জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারা আছে।
বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়। আরে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরে ভূত হয়ে গেছে। সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আইন বাতিল করা হয়েছে। পাকিস্তান ছাড়া বিশ্বের কোনো দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ১০ ডিসেম্বর সরকারের পদত্যাগ ঘটাতে এসে নিজেরা পদত্যাগ করে গেছে বিএনপি। তাতে সরকারের একটু কাতুকুতু লেগেছে। ১ দফা দিতে এসে ১০ দফা দিয়ে গেছে। বিএনপির পতন ১০ তারিখ হয়ে গেছে।
এর আগে সর্বশেষ ২০০৫ সালের ২৩ জুলাই নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ সম্মেলনে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরীকে সভাপতি এবং মোছলেম উদ্দিন আহমদ (বর্তমান সভাপতি) সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে ২০১০ সালে আতাউর রহমান খান কায়সারের মৃত্যুর পর প্রয়াত আখতারুজ্জামান চৌধুরীকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করা হয়। ২০১২ সালের ৪ নভেম্বর আখতারুজ্জামান চৌধুরীর মৃত্যুর পর ২০১৩ সালে তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোছলেম উদ্দিন আহমদকে সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মফিজুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্র থেকে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটিই বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছে।