দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন গতকাল রোববার মুন্সিগঞ্জে নৌকা প্রার্থীর এক সমর্থককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর কুমিল্লায় তর্কাতর্কির একপর্যায়ে ঈগল প্রতীকের কিছু সমর্থকের ধাক্কায় মাটিতে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন এক ব্যক্তি। একই দিন ঢাকাসহ অন্তত ২১ জেলায় হামলা–সংঘর্ষ ও বিভিন্ন ধরনের সহিংস ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জন।
এদিকে ভোটকেন্দ্র দখল, জাল ভোট, অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ৩৮ জন প্রার্থী। ২৮টি আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী এই প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জন করে পুনঃ ভোটের দাবি জানিয়েছেন। ভোট থেকে সরে দাঁড়ানো প্রার্থীদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যাই বেশি।
মুন্সিগঞ্জ ও কুমিল্লায় নিহত ২
মুন্সিগঞ্জ-৩ (সদর ও গজারিয়া) আসনে ভোটকেন্দ্রের পাশে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাসের এক সমর্থককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সকাল ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিরকাদিম পৌরসভার টেঙ্গর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. জিল্লুর রহমান মিরকাদিম পৌর শ্রমিক লীগের সহসভাপতি। ওই আসনে কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ ফয়সালের সমর্থকদের হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, কারা, কেন এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হত্যাকাণ্ডের পর টেঙ্গর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঘটনাস্থলে রক্ত পড়ে রয়েছে। এর পাশেই বসে বিলাপ করছেন জিল্লুর রহমানের মেয়ে মৌমতা ইসলাম (মৌ)। তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য তাঁর বাবা ভোরে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর শুনতে পান তাঁর বাবাকে কোপানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে এসে দেখেন বাবার লাশ পড়ে আছে।
মৌমিতা অভিযোগ করেন, তাঁর বাবা নৌকার পক্ষে নির্বাচনে কাজ করছিলেন। এ কারণে শুরু থেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর (কাঁচি) সমর্থকেরা হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
যাঁদের বিরুদ্ধে এ হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের একজন কাঁচি প্রার্থীর সমর্থক মিরকাদিম পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম। জানতে চাইলে তিনি ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনের কাশারীখোলা প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের পাশে এক যুবকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাটিতে পড়ে নোয়াব আলী (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর কয়েকজন সমর্থক ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।
নোয়াব আলী দেবীদ্বারের গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাশারীখোলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নৌকার সমর্থক বলে দাবি করা হচ্ছে।
নোয়াব আলীর ছেলে মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘আমার বাবা সকালে ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে ফেরার পর নৌকার একজন সমর্থকের সঙ্গে ভোট দেওয়া নিয়ে কথা বলেন। একটি বিষয়ে তাঁরা তর্কে জড়ান। এ সময় ঈগল প্রতীকের কয়েকজন সমর্থক এসে বাবাকে ধাক্কা দিলে তিনি মাটিতে পড়ে যান। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।’
এ ব্যাপারে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানা বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নয়ন মিয়া বলেন, মৃত ব্যক্তির শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই।
সংঘর্ষ–সহিংসতায় অর্ধশতাধিক আহত
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে নৌকা ও ট্রাক প্রতীকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ভোট গ্রহণের শেষ দিকে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে এ সংঘর্ষে চারজন আহত হন। যাত্রাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে শহীদ ফারুক সড়কে এ ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রটি ঢাকা-৫ আসনের অধীন। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারুনর রশীদ মুন্না (নৌকা)। ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মশিউর রহমান মোল্লাও আওয়ামী লীগের নেতা।
চট্টগ্রাম-১০ আসনের খুলশীর পাহাড়তলী ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে নৌকা ও ফুলকপি প্রতীকের অনুসারীদের মধ্যে সকালে সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁরা হলেন শান্ত বড়ুয়া ও মো. জামাল। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁদের। খুলশী থানার ওসি মেয়ামত উল্লাহ প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আসনটিতে নৌকার প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন (বাচ্চু) ও ফুলকপির প্রার্থী চট্টগ্রাম সিটির সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলম।
মাদারীপুর–৩ আসনে ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়ার পথে একটি নছিমনে হামলায় তিন আনসার ও দুই পোলিং এজেন্ট আহত হয়েছেন। সদর উপজেলার বকুলতলায় এ ঘটনা ঘটে। আহত আনসার সদস্যরা হলেন লাইজু বেগম, শাহ-আলম ও জুয়েল ফরাজি। অন্য দুজন হলেন জেলা যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের পোলিং এজেন্ট আবু সাঈদ (রাজু) ও লিজা আক্তার। নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপের সমর্থকেরা এ হামলা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে। মাদারীপুর সদর থানার ওসি এইচ এম সালাউদ্দিন বলেন, হামলাকারীদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।
এর আগে সকালে সদর উপজেলার ঘটকচর বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের দখল নেওয়াকে কেন্দ্র করে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হন। এ সময় নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে ১৫টি ঘরে অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ আসনে ঈগলের প্রার্থী (স্বতন্ত্র) তাহমিনা বেগম।
মাদারীপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক সফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটকচর এলাকায় ১৫টি ঘরে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে দুর্বৃত্তরা তাঁদের ওপরও হামলা চালান।
চাঁদপুর-৪ আসনে একটি কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে নৌকা ও ঈগলের সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহিত চৌধুরীর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। দুপুরে ফরিদগঞ্জ উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের মুন্সীরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ২৬টি গুলি ছোড়ে।
যশোর-৫ আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম ইয়াকুব আলীর দুই কর্মীকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। সকালে মনিরামপুর উপজেলার হেলাঞ্চী কৃষ্ণবাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত ব্যক্তিরা হলেন সাধন কুমার বিশ্বাস ও মশিয়ার রহমান। নৌকার সমর্থকেরা তাঁদের কোপান বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
নোয়াখালী-২ আসনে একটি ভোটকেন্দ্রের কাছে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর (কাঁচি) সমর্থকদের মধ্যে সকালে সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধসহ পাঁচ ব্যক্তি আহত হন। গুলিবিদ্ধ মো. জুয়েলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলায় একটি ভোটকেন্দ্র থেকে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুর্বৃত্তদের হামলায় তিন আনসার সদস্য আহত হন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বগুড়া-১ ও বগুড়া-৬ আসনে সকালে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফরিদপুর-৪ আসনে একটি কেন্দ্রে গুলি এবং আরেকটি কেন্দ্রে নৌকা ও ঈগলের প্রার্থীর পোলিং এজেন্টের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। ফরিদপুর-৩ আসনে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে একটি কেন্দ্রে দুই ঘণ্টা ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।
পটুয়াখালী-৪ আসনে নৌকার কর্মীরা ঈগল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। টিয়াখালীর দুটি কেন্দ্রের বাইরে এসব হামলায় ১৬ জন আহত হন। সিলেটে দুটি কেন্দ্রের সামনে ককটেলের বিস্ফোরণ ও আগুন লাগানো হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে নৌকা ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় পুলিশের ছররা গুলিতে দুজন আহত হয়েছেন।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর দুই সমর্থককে পিটিয়ে আহত, যশোর–৩ আসনের একটি ভোটকেন্দ্রে বোমা হামলায় এক আনসার সদস্য আহত, জয়পুরহাট শহরে ও চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দুটি কেন্দ্রের বাইরে ককটেলের বিস্ফোরণ, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ‘ভোট কেনার’ সময় দুজনকে গণপিটুনি, জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর ও দোকান লুট এবং সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে নৌকা ও স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে মারামারির খবর পাওয়া গেছে।
রাজধানীর দুটি কেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণে এক শিশু, পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছেন।
রংপুরের বদরগঞ্জে একজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময় গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন।
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের একটি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রব্বানীর সমর্থক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি সদস্যরা প্রায় ১৩টি ফাঁকা গুলি ছোড়েন। সংঘর্ষে পুলিশের দুজন ও বিজিবির দুজন সদস্য আহত হয়েছেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে ট্রাক প্রতীকের এক সমর্থকের বাঁ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সন্ধ্যায় মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের খালপাড়া সেতুর ওপর এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিরাজদিখান থানার ওসি মো. মুজাহিদুল ইসলাম জানান, আহত নয়নকে ঢাকা মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত মো. নয়ন মিয়ার (৩০) বাড়ি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। অভিযোগ উঠেছে, নৌকার প্রার্থীর সমর্থকেরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
২৮ আসনে ৩৮ প্রার্থীর ভোট বর্জন
সিলেটে তিনটি আসনে সাতজন প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। এর মধ্যে চারজন স্বতন্ত্র। কক্সবাজারের চারটি আসনে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানো পাঁচজনের তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। ময়মনসিংহের দুই আসনে তিনজন, কুড়িগ্রাম ও মৌলভীবাজারে দুজন করে প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। এ ছাড়া বাকি আসনগুলোতে একজন করে প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
ভোট গ্রহণে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে গতকাল সকাল থেকে ভোট বর্জন শুরু করেন প্রার্থীরা। দুপুরের পর থেকে ভোট বর্জন করা প্রার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।
কেন্দ্র দখল, জাল ভোটের অভিযোগ
জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ এনে ফেনী-৩ (সোনাগাজী-দাগনভূঞা) আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রহিম উল্লাহ ভোট বর্জন করেছেন। গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, ‘৮৩টি কেন্দ্র থেকে আমার নির্বাচনী এজেন্ট বের করে দিয়ে লাঙ্গল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকেরা জাল ভোট দিয়ে ভোট ডাকাতি করেছেন।’
সিলেট-২ (বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর) আসনের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপি হচ্ছে জানিয়ে সাত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চারজনই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। বেলা দুইটার দিকে ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার এলাকায় একটি মিষ্টির দোকানে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন তাঁরা।
কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ এনে ঠাকুরগাঁও-১ আসনে ভোট বর্জন করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী রেজাউর রাজী। গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।
ভোট বর্জনের ঘোষণা দিলেন যাঁরা
সিলেট-২ আসনে গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহিয়া চৌধুরী ও তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ আবদুর রব; সিলেট-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমান; সিলেট–৪–এ তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন; কক্সবাজার-১–এ স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলম, কক্সবাজার-২–এ বিএনএমের প্রার্থী মো. শরীফ বাদশা, কক্সবাজার-৩–এ স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজান সাঈদ, কক্সবাজার-৪–এ স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নুরুল বশর ও জাপার প্রার্থী নুরুল আমিন সিকদার, মুন্সিগঞ্জ–২–এ স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহানা তাহমিনা, টাঙ্গাইল–২–এ স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুছ ইসলাম তালুকদার, ফেনী-৩–এ স্বতন্ত্র প্রার্থী রহিম উল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমান, কুমিল্লা-৭–এ স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ, কুমিল্লা-১১ আসনে স্বতন্ত্র্র প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান, যশোর-১–এ স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম, নারায়ণগঞ্জ-২–এ জাপা প্রার্থী আলমগীর সিকদার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩–এ বিএনএমের প্রার্থী আবদুল মতিন, জামালপুর-৫ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. রেজাউল করিম, খুলনা-১ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, খুলনা-৩–এ স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাতেমা জামান, পাবনা-২–এ বিএনএমের প্রার্থী ডলি সায়ন্তনী, পাবনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস, পাবনা–৫–এ ওয়ার্কার্স পার্টির মো. জাকির হোসেন, কুড়িগ্রাম–৪–এর স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবর রহমান বঙ্গবাসী ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী এ কে এম সাইফুর রহমান, ময়মনসিংহ–২–এ জাপার এনায়েত হোসেন, ময়মনসিংহ–১০–এ স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন ও কায়সার আহমেদ, চাঁদপুর-৪ আসনে জাপার সাজ্জাদ রশিদ, মৌলভীবাজার-২–এ তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এম এম শাহীন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম সফি আহমদ, চট্টগ্রাম-৪–এ জাপার প্রার্থী দিদারুল কবির ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ইমরান এবং ঠাকুরগাঁও-১ আসনে জাপার রেজাউর রাজী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা]