নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো রাজপথে কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। আজ শনিবার সকালে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের মুখে রাস্তায় সমাবেশ করে দলটি। সমাবেশ থেকে দলটি বর্তমান সংবিধানের আলোকে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। পাশাপাশি তারা সংলাপ আয়োজনেরও প্রস্তাব করেছে।
দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে ও দেশদ্রোহী মোসাদ এজেন্টদের শাস্তি এবং সংবিধান অনুযায়ী অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে বিএসপি এই কর্মসূচির আয়োজন করে। এতে কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হয়। তাঁদের মধ্যে নারীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। আজ বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১টা পর্যন্ত চলে সমাবেশ। সমাবেশের সময় পল্টন মোড় থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত রাস্তা দখলে রাখেন তাঁরা।
সমাবেশে বিএসপির চেয়ারম্যান শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা দেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং রাজনীতিবিদদের জন্য অবমাননাকর। নির্বাচন এলেই রাজনৈতিক দলগুলো নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে মাঠে জল্পনা-কল্পনা শুরু করে। হরতাল, অবরোধের নামে মাঠে জ্বালাও-পোড়াও, আন্দোলনের মাধ্যমে জনজীবন বিপর্যস্ত করে ফেলে। আমরা এর অবসান চাই। আমরা বর্তমান সংবিধানের আলোকে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক, এটাই চাই। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জাতীয় সংলাপ আয়োজনের প্রস্তাব করছি।’
বিদেশি শান্তিরক্ষী মিশনে দেশের সশস্ত্র বাহিনী সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। সেই সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে আজকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন সৈয়দ সাইফুদ্দীন।
‘নির্বাচন কমিশন বারবার পরীক্ষা নিলেও পাস করে দেখিয়ে দেব’ দাবি করে বিএসপির চেয়ারম্যান মাইজভান্ডারী বলেন, ‘যাঁরা আমাদের এজেন্ট ব্যাকড পার্টি বলে সম্বোধন করছেন, তাঁরা আমাদের এখনো চেনেন নাই। দেশের প্রধান দলগুলো আমাদের চেনে। আমাদের অবস্থান জানে। নাম না জানা ভুঁইফোড় সংগঠন আমরাও চিনি না। যাঁরা এখনো বুঝতে পারেননি, তাঁদের আগামী ২১ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের মাধ্যমে সুপ্রিম পার্টির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বুঝিয়ে দেব।’
কর্মসূচি ঘোষণা করে সৈয়দ সাইফুদ্দীন বলেন, ২৮ জুলাই চট্টগ্রামে দলটির বিক্ষোভ সমাবেশ। ১ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ, ৭ আগস্ট গাজীপুর, ৮ আগস্ট কুমিল্লা এবং এভাবে প্রতিটি জেলা-উপজেলায় দলটির সমাবেশ হবে।
সুপ্রিম পার্টি ছাড়াও বেশ কিছু দল এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়। তাঁদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, ইসলামি গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন এম এ আউয়াল ও বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টির মহাসচিব ফোরকান আলী হাওলাদার। তাঁরা সুপ্রিম পার্টিকে সমর্থন জানান।
বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টিসহ বেশ কয়েকটি ইসলামী দল বেশ কিছুদিন ধরে একটি জোট গঠনের চেষ্টা করছে।
ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, এই জোট নির্বাচনেও যাবে, নির্বাচন–পরবর্তী সময়ে ওনার (শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী) নেতৃত্বে দেশকে আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য এই জোট কাজ করবে।
মিছবাহুর রহমান বলেন, এই সরকারের পতন এত সোজা নয়। ভয় দেখিয়ে লাভ নাই। নির্বাচন হবে সংবিধানের আলোকে। বিদেশি প্রভুদের কথায় এ দেশে কিছুই হবে না।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিলটি প্রেসক্লাবের দিকে যায়।