খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন না, এ কথা তো কোথাও নেই: আইনমন্ত্রী

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বিস মিলনায়তনে এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
ছবি: প্রথম আলো

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, নির্বাহী আদেশে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ স্থগিত করে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাঁর রাজনীতি করা নিয়ে কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি। চিকিৎসা করার জন্য তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। আর তাঁর এখনকার শারীরিক অবস্থা রাজনীতি করার মতো নয়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বিস মিলনায়তনে এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার সাময়িক মুক্তির সঙ্গে রাজনীতি করা না–করা বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বক্তব্য নিয়ে বিএনপি প্রশ্ন তুলেছে। তাঁদের মতে, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের বিষয়টি সামনে এনে দলের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চাইছে সরকার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘যে দুটি শর্তে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, তাতে বলা ছিল ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। উক্ত সময়ে তিনি দেশের বাইরে গমন করতে পারবেন না। আপনারা যখন প্রশ্ন করেছিলেন রাজনীতি করার বিষয়ে কোনো শর্ত দেওয়া হয়েছিল কি না, এ রকম কোনো শর্ত দেওয়া হয় নাই। আমি সত্য কথা বলি। এ জন্য সত্য কথা বলেছি।’

খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে যুক্ত হতে আইনগত বাধা আছে কি না, সে প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘আপনাদের আমি আইনগত বাধা কোথায় সেটা আগেও বলেছি। উনি নির্বাচন করতে পারবেন না। কারণ, উনি দণ্ডিত। (তিনি) রাজনীতি করতে পারবেন না, এ রকম কথা তো কোথাও নাই।’

তবে খালেদা জিয়ার রাজনীতি করা নিয়ে ‘বাস্তব’ অবস্থা বিবেচনায় নেওয়ার কথা বলেছেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘বাস্তব অবস্থাটা হচ্ছে, তাঁর ভাই যে আবেদনটা করেছিলেন তাতে বলা আছে, তিনি গুরুতর অসুস্থ। তাঁর যদি আরও ভালো চিকিৎসা না হয়, তবে জীবন বিপন্ন হবে। তখন তাঁকে মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী মানবতার খাতিরে সাজা স্থগিত করে মুক্তি দিয়েছিলেন। যিনি অসুস্থ, তিনি রাজনীতি করতে পারেন কি না, সেটা আমি বারবার তখনো বলেছি, সেটা আপনারা দেখেন, বিবেচনা করেন।’

আইনমন্ত্রী এ কথাও বলেছেন যে, ‘স্বাভাবিক মানুষ মনে করে তিনি অসুস্থ, তিনি রাজনীতি করতে পারেন না। এটাই স্বাভাবিক পরিস্থিতি।’

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কারাবন্দী হন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দেশে করোনা মহামারি দেখা দিলে পরিবারের আবেদনে সাড়া দিয়ে প্রায় দেড় বছর পর তাঁর দণ্ডাদেশ স্থগিত করে মুক্তি দেয় সরকার। এরপর থেকে গুলশানের বাসায় আছেন খালেদা জিয়া। মাঝে করোনা সংক্রমণসহ কয়েক দফায় অসুস্থ হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মুক্ত থাকলেও কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না খালেদা জিয়া। বিএনপির নেতারা তাঁর এ সাময়িক মুক্তিকে ‘গৃহবন্দী’ অবস্থা বলছেন।

খালেদা জিয়া দলীয় কার্যালয়ে অফিস করতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বললাম। ওনাদের যদি এতটা দরকার হয়, তাদের আইনজীবীর কাছে চিঠি লিখে জিজ্ঞেস করুক। তারা যদি ব্যর্থ হয়, আমার কাছে জিজ্ঞেস করতে বলেন।’