চট্টগ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ মামলা, গ্রেপ্তার-আতঙ্কে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বাসাছাড়া

চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউড়ি এলাকায় গতকাল সোমবার পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে নগরের কোতোয়ালি থানায় মামলাগুলো করে পুলিশ।

চার মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন, সদস্যসচিব আবুল হাশেমসহ প্রায় ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা, অগ্নিসংযোগ ও দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগে মোট চারটি মামলা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করেছে। অপর মামলার বাদী চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ। এসব মামলায় ৯০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

গতকাল রাতে নগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বাসায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে তারা কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। গ্রেপ্তার এড়াতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা নিজ বাসা ছেড়ে অন্য জায়গায় অবস্থান করছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি জাহিদুল কবির বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে গতকাল রাতে অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নগরের কাজীর দেউড়ি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।

প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষে বিএনপির অন্তত ২৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন পুলিশের পাঁচ সদস্য।

সংঘর্ষকালে ১০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি পুলিশের একটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজীর দেউড়ি এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

হামলার অভিযোগে বিএনপির ১৬ জনকে গতকালই ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ। তাঁদের আজ দুপুরে আদালতে তোলা হবে বলে জানান কোতোয়ালি থানার ওসি জাহিদুল কবির।

বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠাসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের তৃতীয় কর্মসূচি ছিল গতকাল।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম শহরের নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ-সমাবেশের আয়োজন করেছিল চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, কাজীর দেউড়ি থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের একটি মিছিল নাসিমন ভবনের দিকে আসার সময় পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে।