কষ্টের কথা বলতে গেলেই বাধা : নজরুল ইসলাম খান

গাবতলী এলাকায় বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে রাস্তায় খোলা ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে বক্তব্য দেন নজরুল ইসলাম খান
ছবি: প্রথম আলো

শ্রমিক, কৃষক, দোকানদার, কর্মচারীসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসের নিম্নপদস্থ মানুষ কষ্টে আছে। কারণ, প্রতিদিন জিনিসের দাম বাড়ছে। বিপরীতে বেতন-ভাতা বাড়ছে না।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর গাবতলী এলাকায় বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।

বিএনপির এই নেতার দাবি, সংসার চালানোর এই কষ্টের কথা বলতে গেলেই সরকার বাধা দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের দাবি বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে না। উল্টো নির্যাতন–নিপীড়ন, হামলা, মামলা, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে আজ ঢাকার দুই এলাকায় বিএনপির দুটি পদযাত্রার কর্মসূচি ছিল। অন্যটি ছিল ধানমন্ডিতে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আগের রাতের ভোটে নির্বাচিত সংসদ বাতিল করা হোক। ওই সংসদের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হয়েছে, আইনত ওই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ চাই—এসব দাবি কি অন্যায়? আমরা চাই, আমাদের ভোটে সরকার নির্বাচিত হয়ে আমার কাছে জবাবদিহি করুক, দায়বদ্ধ থাকুক।’

নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতে নির্বাচন কমিশনের কাজ নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলে না, আমাদের এখানে হয়। কারণ, আমাদের এখানে নির্বাচন কমিশন অনুগত লোকদের দিয়ে করানো হয়। তারা সুষ্ঠু কাজটি করতে পারে না। করে না। সেই জন্য প্রতিবাদ করা হয়। যতক্ষণ না নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবে, সে পর্যন্ত নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’

আগামী দিনে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক লড়াই চালিয়ে যেতে তিনি নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান। তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) বলেছেন—ফাইনাল খেলা নির্বাচনে হবে। ফাইনাল খেলা যদি নির্বাচনে হয়, সেই ফাইনাল খেলায় নিরপেক্ষ রেফারি লাগবে। আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনা না কি নিরপেক্ষ রেফারি? তিনি বলেন,  শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।

পদযাত্রাটি প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ছিল। প্রদযাত্রার সম্মুখভাগে প্রথমে নারী দল, এরপর যুবদল ও ছাত্রদল এবং শেষের দিকে কেন্দ্রীয় নেতারা ছিলেন

পদযাত্রা কর্মসূচির আগে গাবতলীতে খালেক এন্টারপ্রাইজ নামের একটি বাস কাউন্টারের সামনে রাস্তায় খোলা ট্রাকের ওপর দাঁড়িয়ে নেতারা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজারো নেতা-কর্মী সড়কে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। এতে ঢাকায় প্রবেশের পথে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।

অন্যদিকে গাবতলী থেকে মাজার সড়কের দিকে যানবাহন যেতে না পারায় আমিনবাজারের দিকে যাওয়ার পথেও যানজট দেখা গেছে।

পরে বিকেল পৌনে চারটার দিকে পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রাটি প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ছিল। প্রদযাত্রার সম্মুখভাগে প্রথমে নারী দল, এরপর যুবদল ও ছাত্রদল এবং শেষের দিকে কেন্দ্রীয় নেতারা ছিলেন। প্রায় এক ঘণ্টা পরে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে পদযাত্রার অগ্রভাগ শ্যামলীর-আগারগাঁও লিংক রোড সড়কে পৌঁছায়। এ সময় কোনো যানবাহন কলেজগেট-আসাদগেট দিয়ে আসতে পারেনি।

আগারগাঁও লিংক রোডের ডিএনসিসি ওয়ান্ডারল্যান্ড পার্কের সামনে পুলিশের সদস্যরা আগেভাগে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন, যাতে পদযাত্রা নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে এগোতে না পারেন। পরে মিছিলটি আগারগাঁওয়ের দিকে ঘুরে গিয়ে বাংলাদেশ বেতারের সামনে এসে শেষ হয়।