যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড অধ্যাপক আলী রীয়াজের একটি গবেষণার সমালোচনা করে জাতীয় সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি। পাল্টা একটি গবেষণার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর উদ্দেশ্যেই আলী রীয়াজ গবেষণাটি করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে দীপু মনি এই অভিযোগ করেন।
‘দ্য কিউরিয়াস কেস অব ডেমোক্রেটিক ব্যাকস্লাইডিং ইন বাংলাদেশ: অ্যান অ্যানালাইসিস অব পিপলস ফিন্যান্সিয়াল স্যাটিসফেকশন’ শীর্ষক একটি গবেষণার কথা তুলে ধরে দীপু মনি বলেন, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি সরকারব্যবস্থা এবং গণতন্ত্রের প্রতি নাগরিকদের ধারণাকে ইতিবাচক হিসেবে প্রভাবিত করে, এমনকি দেশে যদি নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্নও থাকে। এটি সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উঠে এসেছে। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা দেখিয়েছেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আর্থিক সুরক্ষা মানুষের গণতান্ত্রিক ইতিবাচক চর্চা বজায় রাখে।
দীপু মনি বলেন, শাহরিয়ার ইসলাম ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মফিজুর রহমান ওই গবেষণা করেছেন। তাঁদের এই গবেষণা মূলত অধ্যাপক আলী রীয়াজের ‘ডেমোক্রেটিক ব্যাকস্লাইডিং ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে গবেষণাকে ভুল প্রমাণিত করেছে।
দীপু মনি দাবি করেন, ‘আলী রীয়াজ ও একই ঘরানার আরও কয়েকজন সাধারণত রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতি, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার বিষয়গুলোকে ইস্যু হিসেবে তুলে ধরেছেন। তাঁদের তথ্য ও উপাত্ত সেকেন্ডারি সোর্স থেকে নেওয়া। কিন্তু মফিজুর রহমান ও শাহরিয়ার ইসলামের গবেষণায় জনগণের মতামতের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, যা আলী রীয়াজ ও অন্যরা করেননি।’
দীপু মনি বলেন, তাঁরা (আলী রীয়াজ) কেবল প্রাতিষ্ঠানিক ও একমাত্রিক গণতান্ত্রিক পশ্চাৎপসরণের ধারণাটি প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। তার মানে আলী রীয়াজ ও অন্যরা গবেষণায় জনগণের আচরণ ও বাস্তবতা বিবেচনা করেননি। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর উদ্দেশ্যেই তাঁরা এটি করেছেন।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি প্রশ্ন রাখেন, প্রতি পাঁচ বছর পর এক দিনের নির্বাচনের সন্তুষ্টি কি গণতন্ত্র নিশ্চিত করে? বিশেষত যাঁরা নির্বাচনের জয়ের নিশ্চয়তা ছাড়া নির্বাচনে যাবেন না বলে পণ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করলেই কি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে?
দীপু মনি এ–ও বলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণসহ তার উন্নততর, সচ্ছল জীবন যদি নিশ্চিত করা যায়, তার যদি চলার, বলার, করার, জানার অবাধ স্বাধীনতা থাকে, তবে কি সে এক দিনের নির্বাচনব্যবস্থার ঘাটতিকে বড় করে দেখে? নাকি সে তার জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে?