রেজা কিবরিয়া–নুরুল হক নুরের দ্বন্দ্ব

গণ অধিকার পরিষদে অস্থিরতা

গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া (বাঁয়ে) ও সদস্যসচিব নুরুল হক
ফাইল ছবি

রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নুরের দ্বন্দ্বে ভাঙনের মুখে পড়েছে গণ অধিকার পরিষদ।
দলটির আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়াকে বাদ দিয়ে দলের ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাতে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গণ অধিকার পরিষদের শীর্ষ দুই নেতার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ–পরস্পরবিরোধী অবস্থানের কারণে দলটিতে অস্থিরতা চলছে অনেক দিন ধরেই। বিভিন্ন সময় তাঁরা প্রকাশ্যেও বিরোধে জড়িয়েছেন।

সম্প্রতি দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া এবং সদস্যসচিব নুরুল হক একে অপরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁরা নিজ নিজ ফেসবুক পাতায়ও পোস্ট দিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন।

দুই নেতার বিরোধে দলে অস্থিরতা বেড়ে যাওয়ায় গত রোববার ঢাকায় রেজা কিবরিয়ার বাসভবনে গণ অধিকার পরিষদের নেতারা বৈঠকে বসেছিলেন।

দলটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, সেই বৈঠকেও পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এর ফলে কোনো সমাধান সেদিন হয়নি।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, রোববারের বৈঠকে রেজা কিবরিয়া দলের সদস্যসচিব নুরুল হকের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেশী দেশের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ এবং ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করার অভিযোগ করেন।
এ ছাড়া রেজা কিবরিয়া দলের তহবিল নিয়ে স্বচ্ছতার প্রশ্ন তোলেন।

অন্যদিকে নুরুল হক পাল্টা অভিযোগ করেন যে তাঁদের দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া অনেক দিন ধরে ফরহাদ মজহার ও শওকত মাহমুদের নেতৃত্বাধীন ইনসাফ কায়েম কমিটির কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। সে জন্য তিনি অর্থ পাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন নুরুল হক।

এ ছাড়া দলের কর্মকাণ্ডে সময় না দেওয়ার অভিযোগও করা হয় রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে।

রোববারের বৈঠকে কোনো সমাধান হয়নি। পরদিন রেজা কিবরিয়া বিদেশে চলে যান।
তবে গতকাল রেজা কিবরিয়ার অনুপস্থিতিতে গণ অধিকার পরিষদের নেতারা আবার বৈঠকে বসেন। এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন নুরুল হক।

গতকালের বৈঠকে রেজা কিবরিয়ার অনুপস্থিতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হয় রাশেদ খানকে। একই সঙ্গে অল্প সময়ের মধ্যে দলের কাউন্সিল করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।

রাশেদ খান প্রথম আলোকে তাঁদের দলের বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো নিশ্চিত করেছেন।
দলটির অন্য একাধিক সূত্র বলেছে, দলের দুই নেতার বিরোধের মীমাংসা সম্ভব হবে কি না, এই প্রশ্ন তাঁদের অনেকেরই রয়েছে।