আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। আদালতের কাছে সরকারি চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে ৮০ শতাংশ কোটার প্রস্তাব দেবে সরকার।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের রাজপথ থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল ঢাকাসহ সারা দেশ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। রাজধানী ছাড়াও দেশের ৪৭টি জেলায় গতকাল দিনভর বিক্ষোভ, অবরোধ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, পুলিশের হামলা-গুলি ও সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ২৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত দেড় হাজার।
কোথাও কোথাও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের, আবার কোথাও সরকার সমর্থক বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পর গত বুধবার রাতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। ‘শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও সোয়াটের ন্যক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা এবং কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে’ বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন (সর্বাত্মক অবরোধ) কর্মসূচি ঘোষণা করেন তাঁরা। এর সমর্থনে গতকাল দলে দলে রাস্তায় নেমে আসেন শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবারও শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচি চলছে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে এবার আন্দোলন শুরু হয় গত ৫ জুন। বিরতি দিয়ে জুন মাসে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর টানা আন্দোলন শুরু হয় ১ জুলাই। এটি চলে মূলত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর মঙ্গলবার সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলন। এদিন হামলা-সংঘর্ষে সারা দেশে নিহত হন ছয়জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। তবে বুধবার সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীরা মেনে নেননি। এর আগে মঙ্গলবার সব স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। বন্ধ করা হয় সিটি করপোরেশন এলাকার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ও।