রওশন এরশাদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির (জাপা) সম্পর্ক ‘স্পর্শকাতর’ বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মো. মুজিবুল হক (চুন্নু)। তিনি বলেন, এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। তবে রওশন এরশাদের নাম ব্যবহার করে যাঁরা অন্যায় করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে জাপার চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে দলের প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুজিবুল হক এ কথা বলেন।
এ প্রসঙ্গে জাপার মহাসচিব দলের দুই কো–চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ ও সৈয়দ আবু হোসেনকে বহিষ্কার করার কারণও ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে বহিষ্কার করার জন্য কাজী ফিরোজ রশীদের বাসায় মিটিং হয়েছিল। তাই কাজী ফিরোজ রশীদকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর তথাকথিত সম্মেলন কমিটির সভায় বক্তৃতা করায় সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কারণ, বাবলা সাহেব নিজেই পার্টি থেকে চলে গেছেন।
জাপার মহাসচিব জানান, দল থেকে বহিষ্কৃত অনেকেই আবার দলে ফিরতে চেয়ে যোগাযোগ করছেন। ‘অমার্জনীয়’ অপরাধের জন্য যাঁরা বহিষ্কৃত হয়েছেন, তাঁরা ছাড়া অন্য বহিষ্কৃত ব্যক্তিরা ক্ষমা চাইলে চেয়ারম্যান যেন সহানুভূতির দৃষ্টিতে বিবেচনা করেন, সে ব্যাপারে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হয়েছে।
৯ মার্চ জাতীয় পার্টির নামে কেন্দ্রীয় সম্মেলন ডেকেছেন দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ ও তাঁর অনুসারীরা। তার আগেই জাপার প্রেসিডিয়াম ও সংসদ সদস্যদের এই যৌথ সভা হয়।
জাপার চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কাদেরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, গোলাম কিবরিয়া, ফখরুল ইমামসহ ২৬ জন।
জাপা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সভাপতির বক্তব্যে জি এম কাদের বলেছেন, জাতীয় পার্টি কোনো বিশেষ দলকে বাঁচাতে রাজনীতি করবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের নিজস্ব রাজনীতি নিয়ে এগিয়ে যাব। জনগণের চাহিদা বিবেচনা করে রাজনীতি করব। আমরা গণমানুষের স্বার্থ বিবেচনা করে কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
সভায় জি এম কাদের জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জাতীয় পার্টির সম্মেলন হবে। তার আগে সব জেলা ও উপজেলায় দলের সম্মেলন শেষ করতে হবে। শিগগিরই জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভা, ইফতার মাহফিল এবং বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করা হবে।
পরে জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক সাংবাদিকদের বলেন, এপ্রিল মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভা হবে। সভায় জেলা ও উপজেলার নেতারা থাকবেন। এ ছাড়া আগস্টের মধ্যে তিন থেকে পাঁচ সদস্যের ছোট ছোট কমিটি করে জেলায় পাঠানো হবে। তারা দলের সাংগঠনিক অবস্থা পর্যালোচনা করে কেন্দ্রে প্রতিবেদন দেবে। আগস্টের মধ্যেই সব জেলার সম্মেলন সম্পন্ন করা হবে। এরপর আগামী ১২ অক্টোবরে কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।