কোটাপদ্ধতি বাতিল বা বহাল নয়, সংস্কার জরুরি: জাসদ

সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল বা বহাল নয়, সংস্কার জরুরি বলে মনে করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। তাই কোটা সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে দলটি।

জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে কোটা নিয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরেন। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য বৈষম্যমূলক পেনশন-ব্যবস্থার পরিবর্তে সর্বজনীন পেনশন চালুর দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের পরিবর্তে পুরোপুরি বাতিল করে দেওয়া ছিল সরকারের আবেগপ্রসূত ভুল সিদ্ধান্ত।

বিবৃতিতে বলা হয়, এরপর মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালে উচ্চ আদালতের রায়ের পর তা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের ‘বাংলা ব্লকেড’ আন্দোলন যে নিছক কোটা বাতিলের নিষ্পাপ আন্দোলন নয়, তা-ও ইতিমধ্যেই তাঁদের কথাবার্তার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে।

জাসদ বলছে, মুক্তিযোদ্ধারা শুধু জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান নন, তাঁরা ও তাঁদের পরিবারগুলো পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সরকারগুলোর মাধ্যমে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্বাধীনতার পর সব সরকার যৌক্তিক কারণে কোটাপদ্ধতি বহাল রেখেছে। সমাজে বৈষম্য কমানোর দায়িত্ব থেকেই সরকার এটা করেছে।

তারপরও কোটাপদ্ধতি একসময় অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়লে, তা তুলে দিতে হবে বলেও মনে করে জাসদ। দলটি বলছে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা পরিবারে কত প্রজন্ম পর্যন্ত, কীভাবে এই সুবিধা লাভ করবে, তার পদ্ধতি ও সময়কাঠামো নির্ধারণ জরুরি। সংবিধানের আলোকে কোটাব্যবস্থা পর্যালোচনা করে নারী, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধীসহ পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য যৌক্তিক পরিমাণ কোটা সংরক্ষণ করে কোটাব্যবস্থার যৌক্তিকীকরণ করতে হবে।

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে ২০১৮ সালে বড় ছাত্র আন্দোলন হয়েছিল। সেই আন্দোলনের জেরে এক পরিপত্রের মাধ্যমে সরকার কোটাব্যবস্থাই বাতিল করে দেয়। সম্প্রতি এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটার অংশটি বাতিল করেন উচ্চ আদালত। এরপর আবারও শুরু হয়েছে আন্দোলন।