বিএনপি তো বলেনি জোট ভেঙেছে, আমরা কীভাবে বলি: জামায়াত নেতা মোহাম্মদ তাহের

জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের
ছবি: সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামী আর ২০–দলীয় জোটে নেই—দলটির আমিরের এমন এক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে নানামুখী আলোচনা শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে জোটের প্রধান দল বিএনপি এখনো কিছু বলেনি।

আর জামায়াত নেতারা বলছেন, জোটের বিষয়ে তাঁরা আগের অবস্থানেই আছেন। নতুন করে কিছু ঘটেনি।

তবে জোটের অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, অনেক দিন ধরেই ২০–দলীয় জোট নিষ্ক্রিয়। জামায়াতের সঙ্গে যে আগের মতো সদ্ভাব নেই, আন্তর্জাতিক মহলকে সেটা দেখাতে চায় বিএনপি। এ কারণে বিএনপি কিছুদিন ধরে জামায়াতের সঙ্গে দূরত্ব রেখে চলছে।

সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই দুই দলের মধ্যে এ বোঝাপড়া হয়েছে যে তারা জোটগত না হলেও যুগপৎ আন্দোলনে থাকবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের রোববার প্রথম আলোকে বলেন, দলের আমিরের ওই বক্তব্য ছিল কর্মীদের সঙ্গে ঘরোয়া এক বৈঠকে খোলামেলা আলোচনা। দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়।

বিএনপির সঙ্গে জোট আছে নাকি ভেঙে গেছে-এ প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি তো বলেনি যে জোট ভেঙে গেছে। আমরা কীভাবে বলি ভেঙে গেছে।’

জোট নিয়ে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের একটি বক্তব্য রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে বলতে শোনা যায় ঘরোয়া একটি ভার্চ্যুয়াল সভায় তিনি দলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমরা এত দিন একটা জোটের সঙ্গে ছিলাম। ছিলাম বলে আপনারা হয়তো ভাবছেন কিছু হয়ে গেছে নাকি? আমি বলি হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘এই জোটের সঙ্গে বিভিন্ন দল যারা আছে, বিশেষ করে প্রধান দলের (বিএনপি) এই জোটকে কার্যকর করার কোনো চিন্তা নাই। বিষয়টা আমাদের কাছে স্পষ্ট দিবালোকের মতো এবং তারা আমাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন বাস্তবতা হচ্ছে নিজস্ব অবস্থান থেকে আল্লাহর উপর ভর করে পথচলা। তবে হ্যাঁ, জাতীয় স্বার্থে একই দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করব ইনশা আল্লাহ।’

জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘আমরা তাদের (বিএনপি) সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছি, এর সাথে তারা ঐকমত্য পোষণ করেছে। তারা আর কোনো জোট করবে না। এখন যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব।’

বিএনপির পক্ষ থেকে এ বক্তব্যের কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে জামায়াতের আমিরের এ বক্তব্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিএনপি–জামায়াতসহ চারদলীয় জোট ২০০১ সালে একসঙ্গে নির্বাচন ও পরে সরকার গঠন করে। ওই সরকারে জামায়াতের দুই শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ মন্ত্রী হন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির এ জোট ২০–দলীয় জোটে পরিণত হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ২০–দলের পাশাপাশি বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে পৃথক জোট করে। তখন থেকেই জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির মন–কষাকষি শুরু হয়।