ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার: গণতন্ত্র মঞ্চ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

কর্তৃত্ববাদী শাসন টিকিয়ে রাখতে সরকার বিরোধী মত প্রকাশের পথ স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো গণবিরোধী আইন প্রণয়ন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, প্রতিদিন নানা অজুহাতে এ আইনকে হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

রোববার রাজধানীতে গণসংহতি আন্দোলনের কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের দিনব্যাপী এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা এসব অভিযোগ করেন। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এতে সভাপতিত্ব করেন।

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক কর্মী, অ্যাকটিভিস্ট, সাংবাদিক, শিল্পী ও জনসমাজের নানা প্রতিনিধিদের বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে রাতের অন্ধকারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। জামিন না দিয়ে মাসের পর মাস জেলখানায় আটক রাখা হচ্ছে তাদের। সরকার এই আইন (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) বাতিলে জনদাবির কোনো তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন নামে আরও দমনমূলক আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।

মঞ্চের নেতারা বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সদস্যপদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী। অপরদিকে গুমবিরোধী কনভেনশনেও স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু ক্রমাগতভাবে মানবাধিকার পরিপন্থী নানা অপতৎপরতার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে চলেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী র‌্যাব ও পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর সরকার কিছুটা নিয়ন্ত্রিত আচরণ করতে বাধ্য হয়।

সভায় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা সারা দেশে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ-বিক্ষোভের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অব্যাহত হত্যা-দমন-পীড়ন, হামলা-মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তাঁরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী একদিকে মুখে বলছেন বিরোধী দলের প্রতিবাদ বিক্ষোভে কোনো হামলা কিংবা গ্রেপ্তার করা হবে না। অথচ বাস্তবে জনগণের করের টাকায় পরিচালিত রাষ্ট্রীয় পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি ভোলায় পুলিশের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের দুজন নেতাকে গুলি করে হত্যা এবং নাটোরে যুব অধিকার পরিষদের এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা তুলে ধরেন বক্তারা। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও ঢাকায় গণসংহতি আন্দোলনের নেতা–কর্মীদের হুমকি, শাহবাগে প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের মিছিলে পুলিশি হামলা এবং উল্টো ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলার সমালোচনা করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।

সভায় বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হাসনাত কাইয়ূম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সহসভাপতি তানিয়া রব, গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নূরুল হক, নাগরিক ঐক্যের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহেদ উর রহমান প্রমুখ।