সাক্ষাৎকার: রাশেদ খান মেনন

নৌকা ১৪ দলেরই প্রতীক হয়ে উঠেছে

নির্বাচন সামনে রেখে আসন-ভাগাভাগি বা সমঝোতার বিষয়ে ১৪-দলীয় জোটের শরিক, এমনকি জাতীয় পার্টির সঙ্গেও আলোচনা করছে আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে গতকাল জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কাদির কল্লোল

প্রশ্ন

আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপনাদের ১৪ দলের শরিকদের আসন সমঝোতা কি হয়ে গেছে?

রাশেদ খান মেনন: না, এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আসনের ব্যাপারে আলোচনা চলছে।

প্রশ্ন

আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপনাদের সমঝোতা করে নির্বাচন করতে হয় কেন?

রাশেদ খান: এই জোট তো আজকের নয়। আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ১৪–দলীয় জোটে আছি বহুদিন ধরে। এর আগেও আমরা জোটগতভাবে কয়েকটি নির্বাচন করেছি। জোটের শরিকেরা এবারও জোটগতভাবে নির্বাচন করবে, এই সিদ্ধান্ত তো আগেই হয়েছে। শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও রাজনৈতিক দলগুলো জোটগতভাবে নির্বাচন করে। আমরাও অতীতে জোটগতভাবে নির্বাচন করেছি এবং এখনো করছি।

প্রশ্ন

সমঝোতার বিষয়টি আসন ভাগাভাগির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। আপনারা আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকই চান। সেটা কেন?

রাশেদ খান: আসলে ভোটে নৌকা ও ধানের শীষ—এই দুই প্রতীকেই মানুষের দৃষ্টি থাকে। তবে ১৯৭৯ সালে এবং ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আমি আমাদের ওয়ার্কার্স পার্টির হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে জয়ী হয়েছিলাম। ২০০৮ সালে এসে নৌকা প্রতীক নেওয়ার প্রশ্নটা এসেছে। কারণ, আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী, সমর্থক ও তাদের ভোটাররা ভোটে নৌকা প্রতীককে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। তাঁরা অন্য কোনো প্রতীকে ভোট দেন না। এটি বাস্তবতা। ফলে আমরা অতীতে আমাদের পার্টির প্রতীকে ভোট করলেও এখন বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে থাকি। যেহেতু আমরা জোট থেকেই ভোট করছি।

প্রশ্ন

এবার আসন সমঝোতায় আওয়ামী লীগ তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছে না। আপনারাই তাগিদ দিচ্ছেন। তার মানে কি আপনারা জেতার নিশ্চয়তা চাইছেন?

রাশেদ খান: আমরা আসলে জোটে আছি এবং জোট থেকেই নির্বাচন করছি। এবার বিএনপি নির্বাচনে এলে তখন আমাদের শরিকদের প্রতি অনেক আগ্রহ দেখাত আওয়ামী লীগ। বিএনপি নির্বাচনে আসেনি। সে কারণে আগ্রহটা কম। তবে আলোচনা হচ্ছে।

প্রশ্ন

২০০৮ সাল থেকে আপনারা নৌকা প্রতীকে ভোট করেছেন। আপনাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক শক্তি দিন দিন দুর্বল হচ্ছে, যে কারণে আসন–সমঝোতার তাগিদ দিতে হচ্ছে।

রাশেদ খান: আমাদের সাংগঠনিক শক্তি কম বটেই। যে কারণে এত দর–কষাকষি করতে হয়। দীর্ঘ সময় জোটে থাকার কারণে আমাদের নেতা–কর্মীদের মধ্যে একটা স্তব্ধতাও কাজ করেছে। কারণ, সব বিষয়ে কথা বলা যায় না। ফলে নেতা–কর্মীদের মধ্যে একধরনের নিষ্ক্রিয়তা এসেছে। তবে আমরা টানা কয়েকটি নির্বাচন নৌকা প্রতীকে জোটগতভাবে করেছি। নৌকা ১৪–দলীয় জোটেরই প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রশ্ন

আসন সমঝোতা ও জেতা নিশ্চিত যদি করা হয়, তার মানে কি ভোটকেন্দ্র দখল হবে?

রাশেদ খান: না, তা কেন হবে। ১৪ দলের বাইরে জাতীয় পার্টিসহ আরও অনেক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। ফলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে।

প্রশ্ন

জাতীয় পার্টিসহ নির্বাচনে অংশ নেওয়া অন্য দলগুলোর সঙ্গেও তো আওয়ামী লীগের আসন–সমঝোতা আলোচনা চলছে। তাহলে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক কীভাবে হবে?

রাশেদ খান: জাতীয় পার্টি ও অন্যদের বিষয়ে কী হচ্ছে, তা আমার জানা নেই।