দেশের বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীরা তাঁদের পদে থেকেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে তাঁদের কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলার বিধান রয়েছে।
নির্বচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা’ কী করতে পারবেন আর কী করতে পারবেন না, তার উল্লেখ আছে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায়।
সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মধ্যে আছেন প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সংসদ সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র।
আচরণ বিধিমালা কার্যকর হয় নির্বাচনপূর্ব সময়ে। আর নির্বাচনপূর্ব সময় বলতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচনের ফলাফলের সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত সময়কে বোঝায়।
আচরণ বিধিমালায় বলা হয়েছে, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা তাঁদের সরকারি কর্মসূচির সঙ্গে নির্বাচনী কর্মসূচি বা কর্মকাণ্ড যোগ করতে পারবেন না। তাঁরা নিজের বা অন্যের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি যানবাহন, সরকারি প্রচারযন্ত্রের ব্যবহার বা অন্যান্য সরকারি সুবিধা ভোগ করতে পারবেন না এবং এ উদ্দেশ্যে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারী বা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ব্যবহার করতে পারবেন না।
আচরণবিধি অনুযায়ী, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হলে তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকায় সরকারি উন্নয়ন কর্মসূচিতে কর্তৃত্ব করতে পারবেন না বা এ–সংক্রান্ত সভায় যোগ দিতে পারবেন না। এ ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে সভাপতি বা সদস্য হয়ে থাকলে বা তাঁর মনোনীত কোনো ব্যক্তি পর্ষদে থাকলে নির্বাচনপূর্ব সময়ে তিনি বা তাঁর মনোনীত ব্যক্তি ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো সভায় সভাপতিত্ব বা অংশ নিতে পারবেন না অথবা ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো কাজে জড়িত হতে পারবেন না।
আচরণবিধি অনুযায়ী, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নিজে প্রার্থী বা অন্য কোনো প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট না হলে ভোট দেওয়া ছাড়া নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ বা ভোট গণনার সময় গণনাকক্ষে প্রবেশ বা উপস্থিত থাকতে পারবেন না।
নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া যায়।