ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের

উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের স্বজনদের সরে দাঁড়াতে হবে: ওবায়দুল কাদের

মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যাঁরা প্রার্থী হতে চান (পরবর্তী পর্বে), তাঁদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

আজ শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে দেশের ১৫০ উপজেলায় নির্বাচন হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে আরও তিন ধাপে বাকি সব উপজেলার নির্বাচন হবে। অনেক উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের দলীয় ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সন্তান, নিকটাত্মীয় ও স্বজনেরা মাঠে রয়েছেন। অনেকে প্রথম পর্বের জন্য মনোনয়নপত্রও দাখিল করেছেন। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে এমপি-মন্ত্রীদের স্বজনদের ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২২ এপ্রিল প্রথম পর্বের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন।

নির্দেশনা দেওয়া হলেও অনেকের এখনো নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ানো বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রত্যাহারের তারিখ শেষ হোক, তার আগে এ বিষয়ে কীভাবে বলা যাবে।

সংসদ সদস্য পরিবারের সদস্য হলেই উপজেলা নির্বাচন করা যাবে না, বিষয়টি কতটুকু যুক্তিযুক্ত—এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘এটা ঠিক নয়, আপনি সব যুক্তি উত্থাপন করতে পারেন; কিন্তু আপনার যুক্তি জনগণ কি চোখে দেখছে? দেশের ভোটাররা কি চোখে দেখছে? আওয়ামী লীগের এই সিদ্ধান্তে তৃণমূল পর্যন্ত মানুষ কিন্তু খুশি হয়েছে। দলের তৃণমূলের কর্মীরা তাদের মত–প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। তার কারণ হচ্ছে, একটা দলে আমি এমপি, আমি মন্ত্রী, আবার আমার ভাই, ছেলে—এরাও পদ নিয়ে যাবে সব, তাহলে তৃণমূলের কর্মীরা কী করবে? তাদের পদে যাওয়ার কোনো অধিকার নেই? সে সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত।’

উপজেলা নির্বাচন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের সম্মেলন, কমিটি গঠনপ্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে বলে জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সামনে প্রথম পর্যায়ের নির্বাচন হবে। এই নির্বাচন চলাকালে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কোনো সম্মেলন, মেয়াদোত্তীর্ণ সম্মেলন, কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে।

বিএনপিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত আমাদের এখনো হয়নি। তবে জনগণের কাছে আমরা বিএনপির সন্ত্রাসী রাজনীতির ব্যাপারে ঘৃণার আগুন ছড়িয়ে দিতে পারি। তাদের জনগণের কাছে আরও বিচ্ছিন্ন, আরও অপ্রাসঙ্গিক করার বিষয়ে প্রয়াস আমরা চালাতে পারি। কারণ, বিএনপি রাজনৈতিক দলের পরিচয় দেওয়ার মতো গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। বিএনপিকে কানাডার ফেডারেল আদালত পর্যন্ত সন্ত্রাসী দল হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আসলে বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো বৈশিষ্ট্য এখন প্রকাশ করে না। তাদের কর্মকাণ্ডে তারা একটা সন্ত্রাসী দল, এটাই তাদের পরিচয়।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।