রাজধানীর পুরানা পল্টনের প্রিতম-জামান টাওয়ারের ছয়তলায় নুরুল হকের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়া নেতা–কর্মীদের সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়। সকাল থেকে ভবন মালিকপক্ষ কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। দুপুরে এ ঘটনায় পল্টন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে দলটি।
গণ অধিকারের কয়েকজন নেতার ভাষ্য, পুলিশের লাঠির আঘাত ও ধস্তাধস্তিতে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আমিম মোল্লা, উচ্চতর পরিষদের ফাতেমা তাসনিম। তবে ঘটনার বিষয়ে রাত পৌনে আটটা পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
পুলিশ সরিয়ে দেওয়ার পর কার্যালয় থেকে নেমে নুরুল হক ও রাশেদ খান গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে বক্তব্য দিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে চলে যান। তাঁদের ভাষ্য ছিল, নিয়ম অনুযায়ী ছয় মাস তাঁদের থাকার অধিকার রয়েছে। এরপরও তাঁরা অন্য স্থান দেখছেন। কার্যালয়ে তালা দেওয়ার ফলে সমাধানে তাঁরা আশা করেছিল পুলিশ হয়তো সহায়তা করবে।
সকাল থেকে দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেওয়া বরিশাল জেলা যুব অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার পর থেকে পুলিশ নেতা–কর্মীদের বের করে দিতে শুরু করে। এ সময় তাঁদের মারধরও করেছে।
৭ জুলাই দুই দিনের মধ্যে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়তে নোটিশ দিয়েছিল ভবনের মালিকপক্ষ। গণ অধিকার পরিষদের তৎকালীন সদস্যসচিব নুরুল হক বরাবর এ নোটিশ পাঠানো হয়। জমির মালিকের পক্ষে মো. রাশিদুল আজিম মিয়া নামের এক ব্যক্তি নোটিশটি পাঠিয়েছিলেন।
কার্যালয়ে তালা দেওয়ার পর সকালে প্রিতম-জামান টাওয়ারের কাছে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন নুরুল হক। তখন নুরুল হক বলেছিলেন, সকালে গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয়ে তালা দেন প্রিতম-জামান টাওয়ারের মালিক কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান। তিনি রেজা কিবরিয়ার নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক এবং কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। দলে ভাঙনের পর রেজা কিবরিয়া নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদে আগের দুটি পদে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
নুরুল হক বলেছিলেন, ‘মিয়া মশিউজ্জামান আমাদের দলে থাকার সময় এই কার্যালয় অনুদান হিসেবে দিয়েছিলেন। তিনি এখন দল করবেন না, ভালো। তাহলে চুক্তি অনুযায়ী তিনি মাসিক ভাড়া নেবেন।’ তিনি দাবি করেছিলেন, ভাড়ার চুক্তি অনুযায়ী, ছয় মাস সময় দিতে হবে। ছয় মাসের মধ্যে তাঁরা নতুন কার্যালয় খুঁজে নেবেন। ছয় মাসের আগে কার্যালয় ছাড়বেন না।