জ্বালানি তেলের দাম পাঁচ টাকা কমানোর বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী একটি গল্প বললেন। সেটি হলো, একবার এক দেশে রুটির দাম ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা করার আরজি নিয়ে রুটি বিক্রেতা গেলেন রাজার কাছে। রাজা প্রস্তাব শুনে রুটির দাম ৩০ টাকা করে দিলেন। এতে জনগণ তো মহা ক্ষিপ্ত। তারা দল বেঁধে রাজার কাছে গেল। রাজা তাদের কথা শুনে বললেন, ‘আমি রুটির দাম অর্ধেক করে দিচ্ছি। এখন থেকে দাম হবে ১৫ টাকা।’ রাজার এ কথা শুনে রুটি বিক্রেতা রাজাকে বললেন, ‘আমি তো মহারাজ ১০ টাকাতেই খুশি ছিলাম। আপনি আবার এত বাড়ালেন কেন?’
রাজা বললেন, ‘আমি কী আর সাধে বাড়িয়েছি। ৫ টাকার রুটি ১৫ টাকা হয়েছে। এখান থেকে তুমি ১০ টাকা নেবে। বাকি ৫ টাকা রাজার কর।’
আমীর খসরু বললেন, এভাবে দাম বাড়িয়ে জনগণের সঙ্গে এমন প্রতারণাই করেছে সরকার।
৬ আগস্ট থেকে ডিজেল ও কেরোসিনের লিটারে ৩৪ টাকা এবং পেট্রল ও অকটেনে ৪৬ টাকা দাম বাড়ানো হয়েছিল। এরপর পরিবহন ভাড়া বেড়েছিল সর্বোচ্চ ২২ শতাংশ। এর আগে গত নভেম্বরে লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়ানো হয় ডিজেল ও কেরোসিনের দাম। ওই সময়েও পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ।
গত রোববার ডিজেলে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়। প্রত্যাহার করা হয় ৫ শতাংশ আগাম কর। কিন্তু বিশ্ববাজারে ডিজেলের দাম এখন ১৪০ ডলারের বেশি। তাই শুল্ক কমানোর পরও ঘাটতিতে আছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।
তবে আমীর খসরু মনে করেন, সরকারের দেওয়া তথ্যের মধ্যে গলদ আছে। তিনি বললেন, ইংরেজিতে ‘টোকেনিজম’ বলে একটা কথা আছে। যে হারে দাম বাড়ানো হয়েছিল, সেই তুলনায় যে সামান্য দাম কমানো হয়েছে, তা টোকেন ছাড়া অন্য কিছু নয়। এখানে স্রেফ ‘কমানো’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। বাস্তবে এর ফলে কোনো লাভ হবে না।
জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পর দেশে গণপরিবহনে ভাড়া বাড়ে ১৬ থেকে ২২ শতাংশ। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বাড়ে। এখন কী এসব দামের ওপর জ্বালানির পাঁচ টাকা দাম কমানোর কোনো প্রভাব পড়বে? জবাবে আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, ‘বাজারে এর কোনো প্রভাবই পড়বে না। এর কোনো সম্ভাবনাই দেখি না। বাস্তবে হয়েছে প্রতারণা। কোনো শুভ ইচ্ছা থেকে এ দাম কমানো হয়নি।’