বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্র উন্মোচনে ট্রুথ কমিশন গঠনের দাবি সিপিবির

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম। মঙ্গলবার রাজধানীর মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে
ছবি: সংগৃহীত

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্র উন্মোচনে ট্রুথ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা। বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তাঁরা এ দাবি জানান।

সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন দলের সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুজ্জামান সেলিম ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ।

দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন সিপিবির নেতারা। এই ষড়যন্ত্র উন্মোচনে ট্রুথ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে তাঁরা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র উন্মোচন করে সাম্রাজ্যবাদ এবং লুটেরা পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে দেশ পরিচালনা করলেই কেবল ৭৫–এর ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বদলা নেওয়া হবে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স)। মঙ্গলবার রাজধানীর মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে

সিপিবি সভাপতি শাহ আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সূচিত প্রগতিশীল ধারাকে উল্টে দিয়ে দেশকে পাকিস্তানি ধারায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সামরিক শাসনের অধীনে সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তন করে দেশকে পশ্চাৎমুখী করা হয়েছিল। এখন শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ দেশের ৯৫ শতাংশ মানুষের স্বার্থের বিপরীতে পুঁজিবাদী মুক্তবাজার অর্থনীতির ধারায় দেশ পরিচালনা করছে। তাঁরা সমাজতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িকতা বর্জন করে সাম্রাজ্যবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে তোষণ করে ক্ষমতায় টিকে আছে।

আলোচনা সভার শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন সিপিবির নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার রাজধানীর মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশকে পিছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশ একটি ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে। অর্থনীতি চরম বিপর্যয়ের দিকে গেলেও সরকারের উদ্যোগ মানুষের বিপরীতে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাহাত্তরের সংবিধানের মূল চেতনা ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে রুহিন হোসেন বলেন, গণতন্ত্রহীনতা, সাম্প্রদায়িকতা, লুটপাটতন্ত্র ও সাম্রাজ্যবাদ-আধিপত্যবাদী শক্তিকে পরাস্ত করা ছাড়া গণতন্ত্রকে স্থায়ী করা ও মানুষের মুক্তি অর্জন করা যাবে না।

সভার শুরুতে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন সিপিবির নেতারা।