প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির তিন নেতা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির তিন নেতা

সাংবিধানিক সংকট যেন না হয়, খেয়াল রাখতে বলল বিএনপি

দেশে নতুন করে সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট যেন সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছে বিএনপি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিন সদস্য আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করে এ কথা বলেছেন।

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন হিসেবে ব্যবহৃত রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক হয়। বেলা ১১টায় এই বৈঠক শুরু হয়েছিল। দুপুর ১২টার দিকে যমুনা থেকে বের হয়ে আসে বিএনপির প্রতিনিধিদলটি।

বৈঠকে বিএনপির নেতাদের মধ্যে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহ উদ্দিন আহমদ। এ ছাড়া সভায় আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বিএনপির পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নজরুল ইসলাম খান। এ সময় সাংবাদিকেরা জানতে চেয়েছিলেন, ‘বৈঠকে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে আপনাদের কাছে কোনো কিছু জানতে চাওয়া হয়েছিল কি না বা আপনারা কিছু বলেছেন কি না।’

জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট করে নয়, আমরা বলেছি, দেশে নতুন করে সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট যেন সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে।’

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি, পতিত ফ্যাসিবাদ এবং তাদের দোসরেরা নানা কৌশলে, নানাভাবে দেশে রাজনৈতিক এবং সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমরা মনে করি, দীর্ঘদিন লড়াই করে রক্তের বিনিময়ে আমরা যে পরিবর্তন অর্জন করেছি, সেই পরিবর্তন সুরক্ষায় এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের জাতীয় ঐক্য আরও সুদৃঢ় করা দরকার। এখানে সব রাজনৈতিক দল, শ্রেণি–পেশার সংগঠন, ছাত্র-যুবক—সবার একটি দৃঢ়তর ঐক্য গড়ে তোলা দরকার, যাতে কেউ দেশে নতুন করে সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করতে না পারে। সে ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে।’

পতিত স্বৈরাচারের দোসরেরা যদি কোনো সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালায়, তাহলে গণতন্ত্রকামী ও আন্দোলনরত রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন সংগঠন ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবিলা করবে বলে মন্তব্য করেন নজরুল ইসলাম খান।

আলোচনার বিষয়বস্তু বলতে গিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, সংস্কারের কাজ দ্রুত করা এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে সেই সংস্কারগুলো করা, জনগণের চলমান সংকটগুলো দ্রুত নিরসন করা, সর্বোপরি এই আন্দোলনের মূল আকাঙ্ক্ষা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।

আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে, দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুতের জন্য যে সংস্কারপ্রক্রিয়া চলছে...সেই সংস্কার দ্রুততম সময়ে করে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং বিভিন্ন সংকটে জনগণ যে কষ্ট পাচ্ছে, সেটা দূর করার বিষয়ে সরকারকে আরও তৎপর ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।