গ্রেপ্তার বিএনপি নেতা–কর্মীদের ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ বন্ধের দাবি

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলরুমে আজ সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতারা
  ছবি: সংগৃহীত

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার অনেক নেতা–কর্মীকে রিমান্ডে এনে তথাকথিত ‘স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি’ আদায় করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, এটি মিডিয়া ট্রায়ালেরই নামান্তর। এ কাজের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরকারি দলের রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলরুমে আজ সোমবার দুপুরে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল এ অভিযোগ করেন। ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার করা বিরোধী নেতা–কর্মীদের মিডিয়া ট্রায়াল এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্রেপ্তার করা নেতা–কর্মীদের ঢাকার একটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর’ প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ব্যানারে ওই সংবাদ সম্মেলন হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কায়সার কামাল। তিনি বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, প্রজাতন্ত্রের পুলিশ বাহিনী কোনো অনির্বাচিত সরকারের বিরোধী দল দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে না। একই সঙ্গে দেশের প্রচলিত আইন, বিধি ও সংবিধান অনুযায়ী স্বীয় দায়িত্ব পালনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাব। অন্যথায় আইন ও সংবিধান ভঙ্গকারী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, বিএনপি ও সমমনা আইনজীবীদের মোর্চা ইউনাইটেড ল ইয়ার্স ফ্রন্টের সহ–আহ্বায়ক সুব্রত চৌধুরী, ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সহসভাপতি এম বদরুদ্দোজা, যুগ্ম মহাসচিব মো. রুহুল কুদ্দুস ও ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, ২৮ অক্টোবর বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এর আগে ও পরে ৬১৩টি মামলা দায়েরের মাধ্যমে বিরোধী দলের ১৩ হাজার ৩৮৬ নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

গ্রেপ্তার নেতা–কর্মীদের ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ বন্ধের দাবি জানিয়ে বলা হয়, হাইকোর্ট বিভাগের দ্বৈত বেঞ্চ ২০১২, ২০১৫ ও ২০১৯ সালের বিভিন্ন মামলায় রিমান্ড, গ্রেপ্তার ও পরবর্তী ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ না করার জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক এসব ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ দেশের প্রচলিত আইন ও সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনও বটে।

২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর প্রায় সব থানাতেই মামলা করা হয় বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, এর মধ্যে ২৯ অক্টোবর পল্টন থানায় করা মামলায় বিএনপির মহাসচিবসহ মোটি ১৬৪ নেতা–কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামার সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি।…পল্টন থানার ওই মামলায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিএনপির অনেক দায়িত্বশীল নেতাদের ‘গ্রেপ্তার দেখানো’ হচ্ছে।…মৃত ব্যক্তিকে আসামি করা হচ্ছে।