অভ্যুত্থান শক্তির মধ্যে বিভাজন, বিভক্তিতে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্বেগ

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে বিভাজন, বিভক্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এই জোট বলেছে, ইতিহাসের বাঁকবদলের সন্ধিক্ষণে জন–আকাঙ্ক্ষার নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।

আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এ বক্তব্য তুলে ধরেন। বিবৃতিতে সই করেছেন এই জোটের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জনগণ নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে উল্লেখ করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, জনগণের সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রের যে সংস্কারের দাবি উঠেছে, তা বাস্তবায়নে অভ্যুত্থানের সব পক্ষ, সব অংশীজনের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের বিকল্প নেই।

কিন্তু সফল অভ্যুত্থানের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নানা বিভাজন, বিভক্তির চর্চা শুরু হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এই জোট বলেছে, কোনো কোনো ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীকে রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিতে দেখা যাচ্ছে। বিদ্বেষমূলক, হিংসাত্মক বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার এবং তাদের গৃহীত সিদ্ধান্তের ওপর প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বিভিন্ন স্থানে নারীদের ওপর হামলা এবং হেনস্তা করা হয়েছে উল্লেখ করে গণতন্ত্র মঞ্চ বলেছে, মাজার, মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। কোনো কোনো পক্ষ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিজদের অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্বের দাবি করে জনগণের ঐক্যের ভিত্তি দুর্বল করার চেষ্টা করছে।

যারা ঐক্য বিনষ্ট করে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে, ঘৃণা–বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, অসহিষ্ণু, হিংসাত্মক ও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এই ক্রান্তিলগ্নে অন্তর্বর্তী সরকারকে এই দায়িত্ব নিতে হবে বলেও মনে করে এই মঞ্চ।

অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে বলে গণতন্ত্র মঞ্চ বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে। তারা বলেছে, বিভাজন, বিভক্তির পথ পরিহার করে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ, রাষ্ট্র নির্মাণই এই মুহূর্তে দেশের জনগণের প্রত্যাশা। ক্রিয়াশীল সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি মজবুত করার পরামর্শও দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ।