বিএনপির কার্যালয়

নয়াপল্টনের অলিগলিতেও পুলিশ, ফটকে তালা

গতকাল বিকেলের পরও সড়কে ছিল ব্যারিকেড। নয়াপল্টন এলাকা থেকে আটক অন্তত ৪।

এক ব্যক্তিকে (মাঝে) আটক করে নিয়ে যাচ্ছে সাদাপোশাকধারী পুলিশ। গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে
ছবি: দীপু মালাকার

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফটকে গতকাল শুক্রবারও ছিল তালা। কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত সড়কে ছিল ব্যারিকেড। এই সড়কের বিভিন্ন অলিগলিতেও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেও মোতায়েন ছিল পুলিশ।

এসব কর্মকাণ্ডসহ গতকাল সকাল থেকেই নয়াপল্টন এলাকায় পুলিশের বিভিন্ন তৎপরতা লক্ষ করা গেছে। ভোর থেকেই নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল ও সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে দেওয়া হয়নি। এই এলাকায় চলতে গিয়ে পুলিশের জেরা ও তল্লাশির মুখে পড়তে হয়েছে অনেককে। সেখান থেকে অন্তত চারজনকে আটকও করেছে পুলিশ। দিনভর এলাকাজুড়ে ছিল সাঁজোয়া যান নিয়ে পুলিশের টহল।

এর আগে গত বুধবার পুলিশ–বিএনপি সংঘর্ষের জেরে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত নয়াপল্টন এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে নাইটিঙ্গেল মোড়–ফকিরাপুল সড়কের ব্যারিকেড পুলিশ তুলে নিলেও গতকাল চারটার পরও সে ব্যারিকেড ছিল। এদিকে বৃহস্পতিবার বিএনপি কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা যাওয়ার চেষ্টা করলেও গতকাল দলটির কেউ সেখানে আসেনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে পুরানা পল্টন থেকে নাইটিঙ্গেল মোড়ের দিকে বিএনপি সমর্থকদের ২০ থেকে ৩০ জনের একটি দল ঝটিকা মিছিল নিয়ে এগোতে দেখে পুলিশ তাঁদের ধাওয়া দেয়। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ সফল করতে মিছিল থেকে স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। সেই মিছিল থেকে পুলিশ একজনকে আটকও করে। এই মিছিল ছাড়া বিএনপি সমর্থকদের আর কোনো মিছিল নয়াপল্টন এলাকায় দেখা যায়নি। তবে নাইটিঙ্গেল মোড়ে দুপুরের পর ১০ থেকে ১৫ জন করে তিন থেকে চারটি দল আওয়ামী লীগের সমর্থনে স্লোগান দিয়ে পুরানা পল্টনের দিকে যেতে দেখা গেছে।

গতকাল দুপুর ১২টার পর থেকে নয়াপল্টন এলাকায় অবস্থান আরও জোরদার করে পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুমার নামাজের পর নয়াপল্টন এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে পারেন, এমন আশঙ্কা থেকেই তখন পুলিশ নাইটিঙ্গেল মোড়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এবং ফকিরাপুল এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে সশস্ত্র অবস্থান নেয়।

পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেন নয়াপল্টন এলাকায় অবস্থান নিতে না পারেন, সে জন্য পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ তাঁরা নিয়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় এই এলাকায় সাধারণ মানুষকে আসতে দেওয়া হয়নি।

গতকাল দুপুরে নয়াপল্টন এলাকা পরিদর্শনে যান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) বিপ্লব কুমার সরকার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই নয়াপল্টন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকেই তিনি নয়াপল্টন এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন। এই এলাকায় কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে

তাঁরা তৎপর রয়েছেন। নিরাপত্তার কারণে এই এলাকায় সন্দেহজনকভাবে কাউকে ঘোরাঘুরি করতে দেখলে তাঁরা তল্লাশি করছেন। নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে।