বিরোধী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব মামলাকে ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ বলে মনে করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। সম্প্রতি বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়া শাহজাহান ওমরের উদাহরণ টেনে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, কেউ গাড়ি পোড়ানোর মামলায় অভিযুক্ত হলে তাঁদের ‘আগুন-সন্ত্রাসী’ বলে আওয়ামী লীগ। আর আওয়ামী লীগে যোগ দিলে সেই ‘আগুন-সন্ত্রাসী’ থেকে ‘ফেরেশতা’ হয়ে ভালো হয়ে যান।
রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে আজ বুধবার দুপুরে এক সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন। দশম দফা অবরোধ কর্মসূচির সমর্থনে তাঁরা এই সমাবেশ করেন। সমাবেশের আগে জাতীয় প্রেসক্লাব-সংলগ্ন এলাকা থেকে পুরানা পল্টন, বিজয়নগর, দৈনিক বাংলা মোড় এলাকায় তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল করেন।
বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে জেলে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। সমাবেশে তিনি বলেন, গত দুই সপ্তাহে অন্তত তিনজন কারাবন্দী মৃত্যুবরণ করেছেন, এগুলো হত্যাকাণ্ড। বিরোধীদের বিরুদ্ধে সব মামলা যে ভুয়া, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক ও দমানোর একেকটা হাতিয়ার, এটা প্রমাণ করে দিয়েছেন আইনজীবী শাহজাহান ওমর। যতগুলো মামলা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে করা হয়েছে, সব কটি মামলা শাহজাহান ওমরের বিরুদ্ধেও করা হয়েছিল।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘গাড়ি পোড়ানোর মামলায় যাঁরা অভিযুক্ত হন, আওয়ামী লীগ তাঁদের আগুন-সন্ত্রাসী বলে। কিন্তু আওয়ামী লীগে যোগ দিলে আগুন-সন্ত্রাসী ভালো হয়ে যান। শাহজাহান ওমর আগুন-সন্ত্রাসী ছিলেন, আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে যেন ফেরেশতা হয়ে গেছেন। এখন আর তিনি জঙ্গি, সন্ত্রাসী নন।’
সরকারের রাজনৈতিক ইচ্ছার বাইরে আদালত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না বলে অভিযোগ করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, বিচার বিভাগ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন নয়। মানুষ অত্যাচারিত হলে তখন শেষ রক্ষা মনে করে বিচার বিভাগকে। কিন্তু আজ দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা শুরু করা হয়েছে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না অসুস্থ উল্লেখ করে এই সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার। তিনি বলেন, তাঁর (মান্না) পাসপোর্ট এক বছর ধরে সরকার আটকে রেখেছে। সে জন্য তিনি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে পারছেন না। সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেও পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না।
এই নির্বাচন দেশের মানুষ মানবে না বলে মন্তব্য করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাখখারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেএসডির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম সামছুল আলম।