অবৈধ সরকার হলে খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদন কেন করেন, প্রশ্ন কাদেরের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কৃষক লীগের মহাসমাবেশে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর
ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধ হলে এই সরকারের কাছে খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদন কেন করা হচ্ছে, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) বলেছে, অবৈধ সরকারের কাছ থেকে তারা আর অনুমতি (কর্মসূচি পালনের) নেবে না। তাহলে খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদন কেন করে?

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদের দক্ষিণ ফটকে আজ শনিবার বিকেলে আয়োজিত কৃষক মহাসমাবেশে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

১৯৯৫ ও ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকার কর্তৃক নিহত কৃষকদের স্মরণে এই মহাসমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষক লীগ। সারা দেশ থেকে আসা কৃষক লীগের নেতা-কর্মীরা এতে অংশ নেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মিটিং করতে হলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি না নিলে খবর আছে বলে দিচ্ছি। অনুমতি না নিলে পালিয়ে যেতে হবে।’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে দলটির নেতাদের বক্তব্যের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম কই? তাদের আলটিমেটাম ভুয়া, এক দফা ভুয়া, ৩২ দল ভুয়া, ক্ষমতা দখল ভুয়া, তারাও (বিএনপি) ভুয়া।’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সেদিন আর বেশি দূরে নয়, বিএনপির রাজনীতি কবরস্থানে যাবে। তাদের রাজনীতি কবরস্থানে যাওয়ার সময় এসেছে।

দেশ কারও বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়, উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এদের (বিএনপি) হাতে ১৫ আগস্টের রক্ত, ৩ নভেম্বরের রক্ত, ২১ আগস্টের রক্ত, কৃষকের রক্ত। এদের হাতে দেশ ও গণতন্ত্র নিরাপদ নয়।

কৃষক দলের নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খেলা হবে। প্রস্তুত হয়ে যান। সামনে অক্টোবর-নভেম্বর, এরপর ডিসেম্বর তারপর জানুয়ারি। খেলা হবে। কৃষক ভাইয়েরা প্রস্তুত হয়ে যান। নেত্রী আসছেন, ডাক দেবেন। যখন ডাক দেবেন, রাস্তায় নেমে আসবেন।’

কৃষক লীগের মহাসমাবেশে যোগ দেওয়া নেতা-কর্মীদের একাংশ। ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর

বিএনপি উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রাজপথ দখল করার অধিকার তোমাদের নেই। দখল করতে এলে খবর আছে। অগ্নিসন্ত্রাস করলে হাত গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, কী সুন্দর বাংলাদেশ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ। বিএনপির সময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হতো। এখন পাহাড় পর্যন্ত আলোকিত। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এই আলো নিভে যাবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, তাদের (বিএনপি) সাধ্য নেই অরাজকতা করবে। বিএনপির অরাজকতা ঠেকাতে কৃষক দলের নেতা-কর্মীদের পাহারা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি নির্বাচন বানচাল করার স্বপ্ন দেখছে, উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) এই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। তিনি বলেন, চালের দাম নিম্নমুখী। আলু, পেঁয়াজের দাম একটু বেশি। দাম কমানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’

মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, আহমদ হোসেন প্রমুখ।

কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে কৃষক মহাসমাবেশের সঞ্চালনা করেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম।