নির্বাচনের আগে মাঠ প্রশাসনে বড় রদবদল করতে গেলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, এ রকম বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে তার দায় কে নেবে? কর্মকর্তাদের বদলি করতে গেলে যে খরচ, সেটা কে দেবে?
আজ বুধবার দুপুরে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মো. আলমগীর। তিনি জানান, নির্বাচনের আগে যৌক্তিক কারণ ছাড়া নির্বাচন কমিশন (ইসি) মাঠ প্রশাসনে রদবদলের উদ্যোগ নেবে না। তবে যদি যৌক্তিক কোনো কারণ থাকে—যেমন কোনো কর্মকর্তা নিরপেক্ষ নন, তাঁর আচরণে ও কাজে তা প্রমাণিত, তখন তাঁকে বদলি করা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো.আলমগীর বলেন, ‘আমরা রদবদল করব কেন? একটা যৌক্তিক কারণ বা সুনির্দিষ্ঠ অভিযোগ থাকতে হবে। যদি অভিযোগ থাকে যে এই কর্মকর্তা নিরপেক্ষ নন বা অমুকের পক্ষে কাজ করছেন, যদি সেই প্রমাণ থাকে, তখন আমরা ব্যবস্থা নিব। এ ছাড়া এত হাজার হাজার কর্মকর্তাদের বদলি করা হলে প্রশাসনে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়, দেশ পরিচালনায় অথবা নির্বাচন পরিচালনায় যে একটা বিশাল বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে, এই দায়িত্ব কে নেবে? এখন কোন যুক্তিতে আমরা সবাইকে বদলি করব?’
এই কমিশনার আরও বলেন, ‘বদলি করলে তাঁদেরকে প্রচুর টিএ বিল দিতে হবে, এই টিএ বিলের টাকাটা কে দেবে? কয়েক শ কোটি টাকা টিএ বিল লাগবে।’
একজন কর্মকর্তাকে বদলির সঙ্গে বিভিন্ন খরচের বিষয় তুলে ধরে মো. আলমগীর বলেন, ‘একজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হলে তাঁর পরিবারের যাওয়া–আসার খরচ ও মালামাল পরিবহনের খরচ দিতে হয়। অনেক টাকা দিতে হয়। তারপর বাসা পরিবর্তন করতে হয়। নতুন অফিসার এসে বলবেন, “বাসায় রং করো”, তার একটা খরচ আছে। কারণ, আগের বাসায় তিনি থাকবেন না। এই টাকা কে দেবে? মুখ দিয়ে বদলি বললেই হয় না। বদলি করতে টাকা লাগে। হ্যাঁ, আমরা অবশ্যই বদলি করব, যদি তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকে এবং প্রমাণ পাই।’
বিরোধী দল অভিযোগ করছে, সরকার নিজের মতো প্রশাসন সাজিয়ে রেখেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি আলমগীর বলেন, ‘এই অভিযোগ আমি ১৯৭০ সাল থেকে শুনে আসছি। আমি তখন ছোট ছিলাম প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র ছিলাম, যথেষ্ট বুঝতাম। তখন ইত্তেফাক পত্রিকা পড়েই দেখতাম এসব অভিযোগ। এর পরে যত নির্বাচন বাংলাদেশে হয়ে এসেছে, এই ধরনের অভিযোগ শুনে এসেছি। এই অভিযোগ কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে।’