বড় বাজেটের নামে জনগণের ওপর করের বোঝা চাপানো হয়েছে: বাসদ

বজলুর রশীদ
বজলুর রশীদ

বড় বাজেটের নামে ভ্যাট ও করের বোঝা জনগণের ওপর চাপানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ (ফিরোজ)। তিনি বলেছেন, সামগ্রিকভাবে এই বাজেট পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক শোষণমূলক ব্যবস্থার ভিত্তিকে আরও সম্প্রসারিত করবে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে আরও প্রান্তসীমায় ঠেলে দেবে, বৈষম্য বাড়াবে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করার পর এই প্রতিক্রিয়া জানান বাসদ নেতা বজলুর রশীদ। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর দেশের বয়স যত বাড়ছে, বাজেটের আকার তত বড় হচ্ছে। এবারের বাজেটও তাঁর ব্যতিক্রম নয়। এবারের বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৫ শতাংশ। এই পরিমাণ টাকা আসবে কোথা থেকে?

বাজেটে রাজস্ব আয় থেকে ৫ লাখ কোটি টাকা আসার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বজলুর রশীদ বলেন, এ আয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে ঘাটতি থাকছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু ঘাটতি বাজেট হলেও সরকারকে খরচ তো করতেই হবে। তাই ঘাটতি পূরণের উপায় হিসেবে বলা হয়েছে, ঘাটতি পূরণ (অর্থসংস্থান) করা হবে দুইভাবে বৈদেশিক ঋণ ও অভ্যন্তরীণ ঋণ নিয়ে। বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে নিট ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। আর অভ্যন্তরীণ ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ ঋণের মধ্যে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা, আর সঞ্চয়পত্র বিক্রিসহ ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার কোটি টাকা।

২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা উল্লেখ করে বজলুর রশিদ বলেন, গত এপ্রিলে এসে দেখা গেল প্রয়োজন আরও বেশি। ফলে ব্যাংকঋণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংকঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫  কোটি টাকা, যা বর্তমান অর্থবছরের ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার তুলনায় ২৬ হাজার কোটি বা ২৪ শতাংশ বেশি। এর ফলে ঘাটতি পূরণ হয়তো হবে কিন্তু মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে বহুগুণ।

এ ছাড়া বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বরাদ্দ তুলনামূলকভাবে না বাড়ানোর সমালোচনা করেন তিনি।