বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা বলেছেন, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে মানুষ যাতে সংগঠিত হতে না পারে এ জন্য হামলা, মামলা, ভয়ভীতি দেখিয়ে কর্তৃত্ববাদী শাসন দীর্ঘায়িত করতে চাইছে সরকার। কিন্তু অতীত বলছে, ভয়ভীতির শাসন কখনো দীর্ঘায়িত হয় না। মানুষকে রাস্তায় নেমে সরকারের ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তাঁরা বলেন, কমিউনিস্ট পার্টি কখনো শাসকের রক্তচক্ষু ভয় পায়নি। গণতান্ত্রিক শাসন ও সমাজ পরিবর্তনের সংগ্রাম থেকে দূরে সরেনি।
গতকাল শুক্রবার নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় সিপিবির জনসভায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশের হামলায় দলটির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা দিবালোক সিংহ, নেত্রকোনা জেলা কমিটির সভাপতি নলিনী সরকার, সাধারণ সম্পাদক মোশতাক আহমদসহ নেতা-কর্মী আহত হওয়ার প্রতিবাদে শনিবার সারা দেশে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে সিপিবি। রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে বিক্ষোভ মিছিল-পরবর্তী সমাবেশে সিপিবি নেতারা এসব কথা বলেন।
সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে এই সমাবেশে বক্তব্য দেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক এম এম আকাশ, সাজ্জাদ জহির চন্দন, লুনা নুর, মানবেন্দ্র দেব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সমীর প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, সরকার দেশ শাসনে পুরোপুরি ব্যর্থ। তারা জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে না। কমিউনিস্ট পার্টি নেত্রকোনায় বন্যাদুর্গতদের সহায়তার দাবি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জনসভার আয়োজন করেছিল। কিন্তু পুলিশ ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা বিনা উসকানিতে সমাবেশে হামলা করেছে। সমাবেশে হামলার জন্য কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অপসারণ ও হামলাকারী ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের বিচার করতে হবে।
তাঁরা বলেন, সরকারের ব্যর্থতায় দ্রব্যমূল্য বেড়েছে কিন্তু তার দায় চাপানো হচ্ছে রাশিয়ার যুদ্ধের ওপর। যুদ্ধের আগে কি এখানে দ্রব্যমূল্য বাড়েনি? বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন হলেও সরকার এখানে দুই পয়সা, পাঁচ পয়সা দাম কমিয়ে, বাসভাড়া কমিয়ে জনগণের সঙ্গে তামাশা করছে।
সিপিবি নেতারা বলেন, সার ও ডিজেলের দাম বাড়িয়ে সরকার প্রমাণ করেছে কৃষি ও কৃষকের কাছে সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। পৃথিবীর কোথাও ধনীর গাড়ির জ্বালানি আর গরিবদের ঘরে আলো দেওয়ার কুপির জ্বালানি কেরোসিনের দাম কখনো এক হয় না। কিন্তু বাংলাদেশে হচ্ছে। দেশের কোথাও বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সরকার আগেই দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। এবার মানুষের কথা বলার অধিকারও কেড়ে নিতে চাইছে।