গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের নামে সরকারি দল নিজেদের ডামি প্রার্থী দাঁড় করিয়ে কৃত্রিম প্রতিদ্বন্দ্বিতার আয়োজন করেছে। দেশের বড় অংশের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলগুলো এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই এটা কোনোভাবেই একটা নির্বাচনের মর্যাদা পেতে পারে না।
বর্তমান ও সাবেক জোটসঙ্গীদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করে নির্বাচনে প্রতিযোগিতার ন্যূনতম জায়গাও সরকার বন্ধ করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন জোনায়েদ সাকি। নেতারা বৈঠক করে পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘আমাদের এই আন্দোলন বাংলাদেশের জনগণের সংগ্রাম। এই নেতৃত্বের ওপর ভরসা রেখেই মানুষ ভোটদানে বিরত থেকেছে। তামাশার নির্বাচন বর্জন করে জনগণ গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের পক্ষে রায় দিয়েছে। জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে এই সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’
সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে, নির্বাচন ও ফলাফল বাতিল করে অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন করার দাবি জানান জোনায়েদ সাকি।
বিদেশি পর্যবেক্ষকের বিষয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, নির্বাচনকে বৈধতা দিতে প্রায় ৮০ জন তথাকথিত বিদেশি পর্যবেক্ষক আনা হয়। যাঁরা নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে পর্যবেক্ষক হওয়ার ন্যূনতম শর্ত ভঙ্গ করেছেন। পর্যবেক্ষক হিসেবে এসেছেন গণতন্ত্রহীন দেশের প্রতিনিধি, যৌন নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত, আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ভোটের হার নিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সারা দিনের বিবেচনায় ১ ঘণ্টার ব্যবধানে ১৩ থেকে ১৪ শতাংশ ভোট বেড়ে যাওয়া রীতিমতো ম্যাজিক। মজার ব্যাপার, এই ৪০ শতাংশ ভোট ঘোষণার পরও নির্বাচন কমিশনের ভোট মনিটর আরও অন্তত ৪ থেকে সাড়ে ৪ ঘণ্টা ২৮ শতাংশ ভোট দেখিয়ে গেছে। এমন মনগড়া সংখ্যা বলে নির্বাচন কমিশন জনগণের সঙ্গে চূড়ান্ত প্রতারণা করেছে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘যে ধারায় আমরা আন্দোলন করেছি, তাতে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। সরকার যে নির্বাচন করেছে, তা সমস্ত জায়গায় ধিক্কৃত হয়েছে। বেশির ভাগই বলেছে, এটা কোনো নির্বাচনই হয়নি।’
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘ভূরাজনৈতিক যে স্বার্থ বর্তমান সরকারকে কেন্দ্র করে, সেই বিবেচনায় ভারত তার প্রতিক্রিয়া দিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের রাজনৈতিক সমন্বয়ক ফরিদুল হকসহ মঞ্চের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।