নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতিটি কার্যক্রমে প্রমাণিত হচ্ছে, কমিশন নিরপেক্ষ নয়—এই অভিমত দিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, তাঁরা আগেই বলেছিলেন, এই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। তারা এখন সরকারের সরাসরি হুকুমে কাজ করছে। তাদের এ সাজানো নির্বাচন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দুপুর ১২টার দিকে পুরানা পল্টনের মেহেরবা প্লাজার সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল করেন সংগঠনটির নেতা–কর্মীরা। মিছিলটি দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে কালভার্ট সড়ক দিয়ে বিজয়নগর হয়ে পুরানা পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়।
পল্টন মোড়ে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, নৌকা প্রতীক নিয়েও সরকারি দলের প্রার্থীরা নিশ্চিত হতে পারছেন না। এখন মনোনীত নৌকা, জোটের নৌকা, বিদ্রোহী নৌকা, স্বতন্ত্র নৌকা—এমন অনেক রকম নৌকা দেখা যাচ্ছে।
জোনায়েদ সাকি বলেন আরও বলেন, অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন যাঁদের মনোনয়নপত্র বাতিল করছে, পরে আবার তাঁদের মনোনয়নপত্র ঠিক আছে বলে ঘোষণা দিচ্ছে। সব মিলিয়ে তারা নির্বাচনপ্রক্রিয়াটিকে হাস্যকর করে তুলেছে। কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ এই নির্বাচনে ভোট দিতে যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন বলেন, নাগরিক ঐক্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে এই ডামি নির্বাচন বন্ধ করবে।
সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, বিনা ভোটের সরকার আরও একবার তাদের ক্ষমতা নবায়ন করার জন্য সাজানো নির্বাচন আয়োজন করেছে। তাদের লেজুড় আর কিছু অর্থলোভী, ক্ষমতালোভী লোকদের নিজেদের দলে জুটিয়ে তারা জাতির সঙ্গে যে প্রসহন করতে যাচ্ছে, তা প্রতিহত করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনা হবে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, বর্তমান সরকার সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। বিচার বিভাগের ওপরও জনগণ আস্থা হারিয়েছে। সরকার দেশকে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদে আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, আজ মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর ১৪৩তম জন্মদিন। মেহনতি মানুষের মুক্তি ও গণতন্ত্রের জন্য তাঁর আজীবন সংগ্রামের প্রেরণা নিয়ে এই কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে বেগবান করে তোলা হবে।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্যসচিব হাবিবুর রহমানে সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদে সদস্য আকবর খান। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদউদ্দিন মাহমুদ, যুগ্ম সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারি, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সারসহ অনেকে।
বাংলাদেশের ছয়টি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিয়ে গঠিত একটি রাজনৈতিক জোট গণতন্ত্র মঞ্চ। দল ও সংগঠনগুলো হলো জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।