উচ্চবংশীয় গরু-ছাগলের সঙ্গে উচ্চবংশীয় লুটপাটকারীদের দেখছে দেশবাসী
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা বলছেন, উচ্চবংশীয় গরু-ছাগলের সঙ্গে উচ্চবংশীয় লুটপাটকারীদের দেখছে দেশবাসী। এমন উচ্চবংশীয় লুটপাটকারীদের খুঁজে বের করতে হবে।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে আয়োজিত এক সমাবেশে সিপিবির নেতারা কথাগুলো বলেন। ‘দুর্নীতি হটাও, দেশ বাঁচাও’ স্লোগানে দুর্নীতিবিরোধী এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের অন্যতম নেতা রুহিন হোসেন (প্রিন্স) বলেন, সমাজের ‘উচ্চবংশীয়দের’ সঙ্গে যোগাযোগের মধ্য দিয়ে ও তাদের ছত্রচ্ছায়ায় এই অবাধ লুটপাটের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে এবং অবাধ লুটপাট চলছে। দুর্বৃত্তায়িত অর্থনীতি ও রাজনীতি ভাঙতে না পারলে দুর্নীতির এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
রুহিন হোসেন আরও বলেন, মাঝেমধ্যে টোটকা ওষুধ দিয়ে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে দেখানো হয়। কিন্তু লুটপাটের পথ বন্ধ না করতে পারলে লুটপাটকারী ও লুটপাটের ধারা বন্ধ করা যাবে না। লুটপাটকারী ও টাকা পাচারকারীদের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানান তিনি।
ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশ এবং কাদের সুপারিশে এসব ঋণ অনুমোদিত হয়েছিল, তার শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান সিপিবির সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘কোথায় লুটপাট–দুর্নীতি নেই, সেটা সুনির্দিষ্টভাবে বর্তমান সরকারের কাছে জানতে চাই। পাশাপাশি পাঁচ লাখ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়, লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ, তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা এবং কালক্ষেপণ না করে তাদের জেলে পাঠানোর দাবি জানাচ্ছি।’
সমাবেশে দলের অন্য নেতারা বলেন, সরকার ভারত সফর করে এসে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে। আর চীন সফর নিয়েও উচ্ছ্বসিত দেখাচ্ছে। অথচ ভারত সফরে দেশের স্বার্থে ঝুলে থাকা ৫৪টি নদীর পানি সমস্যা, তিস্তার পানিবণ্টন, সীমান্ত হত্যা, অসম বাণিজ্য নিয়ে কোনো সুখবর নেই। একতরফা রেলের জন্য করিডর দেওয়াসহ তিস্তার পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের জন্য ভারতের টেকনিক্যাল টিম পাঠানোর কথা মেনে নেওয়া হলো, যা দেশবাসী গ্রহণ করেনি।
সিপিবির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহীন রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাজেদুল হক, জলি তালুকদার, কাজী রুহুল আমিন প্রমুখ বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা সাজ্জাদ জহির, ফজলুর রহমান, অনিরুদ্ধ দাশ, লুনা নূর, সাদেকুর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশ থেকে আগামী ৬ জুলাই দেশের সব উপজেলা ও থানায় দুর্নীতিবিরোধী সমাবেশ-বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া আগামী ২ জুলাই বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনের বিক্ষোভ সফল করার আহ্বান জানানো হয়।