বিএনপি ও সমমনাদের যুগপৎ আন্দোলনে থাকল না জামায়াত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী উত্তর আলোচনা সভার আয়োজন করে
ছবি: সংগৃহীত

সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত করাসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকে আজ বুধবার পালিত হলো গণ–অবস্থান কর্মসূিচ। তবে আজকের কর্মসূচিতে জামায়াতে ইসলামী ছিল না। এ কর্মসূচিতে অংশ না নিয়ে জামায়াত ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করে। এ উপলক্ষে ঢাকায় আলোচনা সভাও করে দলটি।

এর আগে গত ডিসেম্বরে বিএনপি সমমনা দলগুলোর সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলেনর কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর অংশ হিসেবে প্রথম কর্মসূচি ছিল ৩০ ডিসেম্বরের গণমিছিল। ওই দিন জামায়াতও ঢাকায় একই কর্মসূচি পালন করে। সেদিন রাজধানীর পল্টন, মালিবাগসহ কয়েকটি এলাকায় জামায়াতের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এরপর আজ বিএনপির গণ–অবস্থান কর্মসূচির দিনে প্রকাশ্য কোনো কর্মসূচি না দিয়ে সভার আয়োজন করল জামায়াত।

আজকের সভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির এবং সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত জামায়াতের আন্দোলন চলবে। যারা গণতন্ত্র মানতে চায় না, তাদের বিরুদ্ধে যুগপৎ আন্দোলন করবে জামায়াত। আজ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

জামায়াতের গণমিছিলে প্রতিবন্ধকতার প্রতিবাদ ও দলের আমিরসহ গ্রেপ্তার রাজনৈতিক নেতা–কর্মীদের মুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে আলোচনা সভাটির আয়োজন করা হয়।

আজকের সভায় মুজিবুর রহমান বলেন, ‘জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযম কেয়ারটেকার সরকার ফর্মুলা আবিষ্কার করেছেন। আওয়ামী লীগ সেই পদ্ধতির দাবিতে আন্দোলন করেছে। আবার তা হাইজ্যাক করে সেই ফর্মুলাকে নিজেদের দাবি করছে। তা–ও যদি হয়, তাহলে তা এখন মেনে নিচ্ছেন না কেন?’

মুজিবুর বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান মইন উ আহমেদের মতো কিছু উচ্চাভিলাষী সেনা কর্মকর্তার যোগসাজশে চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল। মইন উ আহমেদ ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। সেদিন থেকেই এই দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে জামায়াতসহ অন্য অনেক রাজনৈতিক দল।

মুজিবুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘সরকারের কাছে বিক্রীত কিছু মিডিয়া’ সাম্প্রতিক একটি মিছিলের ফুটেজ দেখিয়ে বলেছে, জামায়াত একটি কর্মসূচি পালনের সময় বাড়াবাড়ি করছে, যা সত্য নয়। তাঁর দাবি, মিছিলে পুলিশের কিছু অতি উৎসাহী সদস্য হামলা চালিয়েছেন।

মুজিবুর বলেন, জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান গত ১০ ডিসেম্বর ১০ দফা ঘোষণা করার পর তাঁকে অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের মানুষ কষ্টে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের লোকজন কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছেন। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, ট্রাস্ট, স্কুল, কলেজ, ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখল করে দখলবাজ সরকারে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দিন মোল্লা ও ফখরুদ্দিন মানিক।