এখন দিল্লির পথে রয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের। তিনি সস্ত্রীক দিল্লির উদ্দেশে আজ রোববার দুপুরে ঢাকা ছেড়েছেন বলে তাঁর সহকারী ব্যক্তিগত সচিব প্রথম আলোকে জানিয়েছেন।
ভারতে তিন দিনের এই সফরে জি এম কাদেরের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর সহধর্মিণী ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য শেরিফা কাদের এবং দলের আন্তর্জাতিক–বিষয়ক উপদেষ্টা মাশরুর মাওলা।
জাতীয় পার্টির (জাপা) এক নেতা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আমন্ত্রণে জি এম কাদের ভারত সফরে গেলেন। এই সফরে জি এম কাদেরের ভারত সরকার ও দেশটির ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
ভারত সফর শেষে জি এম কাদেরের ২২ আগস্ট ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতি আনুগত্যের বাইরে গিয়ে জাতীয় পার্টি কখনো স্বতন্ত্র কোনো অবস্থান নিতে পারবে কি না, এ প্রশ্ন দলটির ভেতরেই রয়েছে।
তবে বেশ কিছুদিন ধরে জি এম কাদের সরকারের সমালোচনা করে বক্তব্য দিচ্ছেন। এমনকি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কি না—জি এম কাদের বিভিন্ন সময় তাঁর বক্তব্যে এ প্রশ্নও তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য অনেক সময় নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিএনপির দাবির সঙ্গে একই সুরে মনে হচ্ছে। অবশ্য বিএনপি আন্দোলনে জাতীয় থাকছে না বলে দলটির পক্ষ থেকেই বলা হচ্ছে।
এমন পটভূমিতেই জাতীয় নির্বাচনের আগে ভারতের ক্ষমতাসীন দলের আমন্ত্রণে জাতীয় পার্টির নেতা জি এম কাদেরের দিল্লি সফর নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা চলছে।
অন্যদিকে, জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে গতকাল এই সাক্ষাৎ হয়।
এই সাক্ষাতের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী কুশল বিনিময় করেন এবং রওশন এরশাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ দেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন নিয়েও তাঁরা আলোচনা করেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে গঠনমূলক ও ইতিবাচক ভূমিকা পালনের জন্য জাতীয় পার্টিকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
জাতীয় পার্টিতে রওশন এরশাদ এবং জি এম কাদেরের মধ্যে বিরোধ চলছে অনেক দিন ধরে। এখন আসন্ন নির্বাচনে দলের অবস্থান কী হতে পারে, এ নিয়ে তাঁদের বিরোধ আরও বেড়েছে বলে দলটির নেতাদের অনেকে বলছেন।
জাতীয় নির্বাচন এলে প্রতিবারই জাতীয় পার্টিতে নানা তৎপরতা দেখা যায়, এবারও এর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে না।