গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের নেতা-কর্মীরা স্লোগান-করতালি দিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান। ৪ ঘন্টার অবস্থান কর্মসূচিতে এখন বক্তব্য দিচ্ছেন বিভিন্ন জেলা কমিটি, দলের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন এবং পেশাজীবি সংগঠনের নেতারা। দেশাত্মবোধক ও বিপ্লবী গান পরিবেশন করছেন জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা।
বিএনপি আজ বুধবার ঢাকাসহ ১০টি বিভাগীয় শহরে (সাংগঠনিক বিভাগ) গণ-অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছে। ঢাকার নয়াপল্টনে বেলা সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচি শুরু হয়। বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত করা ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপির নেতৃত্বে বিভিন্ন দল ও জোট গত ডিসেম্বর থেকে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছে। আজকের গণ-অবস্থান তাদের দ্বিতীয় যুগপৎ কর্মসূচি।
জামিনে মুক্তি পাওয়ার দুই দিন পরই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকার কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়েছেন। বেলা সাড়ে ১১টায় কর্মসূচিস্থলে আসেন মির্জা ফখরুল। নেতা-কর্মীরা স্লোগান ও করতালিতে তাকে স্বাগত জানান। সদ্য কারামুক্ত আরেক নেতা মির্জা আব্বাসও উপস্থিত হয়েছেন গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে।
নয়াপল্টন এলাকায় দেখা যায়, ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল পর্যন্ত সড়কের একপাশে বিএনপি ও দলের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের জন্য বসার জায়গা নির্ধারিত রয়েছে। সড়কে ত্রিপল বিছিয়ে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফুটপাতে কিছু চেয়ার বসানো হয়েছে। দলের নেতা-কর্মীরা তাদের জন্য নির্ধারিত জায়গায় বসছেন। দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছোট মঞ্চ করা হয়েছে।
নেতা-কর্মীদের ভিড় একপাশে ফকিরাপুল ছাড়িয়ে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে। আরেকপাশে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় ছাড়িয়েছে। সড়কের একপাশে অবস্থান নেওয়ার কথা থাকলেও সড়কের দুই পাশের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দিচ্ছেন বিভিন্ন জেলা কমিটি, দলের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন এবং পেশাজীবি সংগঠনের নেতারা। বক্তব্য রেখেছেন গাজীপুর মহানগরের সদস্যসচিব শওকত হোসেন, মানিকগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক এস এ কবির জিন্নাহ, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের আহবায়ক শাখাওয়াত হোসেন, ঢাকা জেলার সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
নেতারা তাদের বক্তব্যে বলেন, দেশে গণজাগরণ তৈরি হয়েছে। এই সরকারের পতন সময়ের ব্যাপার৷ সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের সময় হয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী নেতা-কর্মীদের জুলুম, নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। এই সরকারের পতন না ঘটিয়ে নেতা-কর্মীরা ঘরে ফিরবে না।
গণ-অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে পুলিশ সতর্ক ব্যবস্থা নিয়েছে। কাকরাইল ও ফকিরাপুল মোড়ে জলকামান নিয়ে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। এর বাইরেও বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে পুলিশ সদস্যরা দাঁড়িয়ে আছেন।
এর আগে ৩০ ডিসেম্বর সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে ঢাকায় বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো যুগপৎভাবে গণমিছিল করেছিল। তার আগে বিএনপি রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা ও ২৭ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেছে।