দলের আরও দুই নেতাকে বহিষ্কার করল জাতীয় পার্টি। তাঁরা হলেন দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াহ ইয়া চৌধুরী ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মো. শফিকুল ইসলাম। আজ রোববার জাতীয় পার্টির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মো. মুজিবুল হকের সুপারিশে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের ঢাকা মহানগর উত্তরের কমিটি বিলুপ্ত করেছেন। একই সঙ্গে দুই নেতাকে দলীয় সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার জাপার কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়কে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
৭ জানুয়ারি ভোটের পর থেকে জাতীয় পার্টিতে অস্থিরতা চলছে। দলটি এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ছেড়ে দেওয়া ২৬টি আসনের মধ্যে মাত্র ১১টিতে জিততে পেরেছে। দলটির প্রার্থীদের ৯০ শতাংশই জামানত হারিয়েছেন।
পরাজিত প্রার্থীদের একাংশ দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে ভোটের সময় সহায়তা না করা, খোঁজ না নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলছেন।
ভোটের পর গত বৃহস্পতিবার সকালে জাপার বনানীর কার্যালয়ের সামনে নেতা-কর্মীদের একটি অংশ বিক্ষোভ করে। এতে ঢাকা ও আশপাশ এলাকার কয়েকজন প্রার্থীও ছিলেন। সেখানে জি এম কাদের ও মুজিবুল হকের পদত্যাগ দাবি করা হয়। এরপর বহিষ্কার করা হয় কাজী ফিরোজ রশীদ ও সুনীল শুভ রায়কে।
আজ পরাজিত কয়েকজন প্রার্থীর নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীদের একটা অংশ ঢাকায় একটি মতবিনিময় সভা করেছে। এই সভায় দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরসহ শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ভোটে প্রার্থীদের সহযোগিতা না করাসহ নানা অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এই মতবিনিময় সভা করেন জাতীয় পার্টির বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা। মতবিনিময় সভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে দলটির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম, সাইফুদ্দিন আহমেদসহ বেশ কয়েকজন নেতা বক্তব্য দেন।
মতবিনিময় সভায় বিক্ষুব্ধ নেতারা ভোটে তাঁদের দলের বিপর্যয়ের জন্য শীর্ষ নেতৃত্বকে দায়ী করেন। তাঁদের কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে জাপার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁরা বলেন, নির্বাচনে জাতীয় পার্টির যাওয়া উচিত হয়নি।
মতবিনিময় সভায় কিশোরগঞ্জ–৬ আসনে পরাজিত জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের আগে একই মিলনায়তনে বিশ্বাস করে দলের চেয়ারম্যানকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের এবারও বলির পাঁঠা বানানো হলো।’