বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ মানুষের রক্ত নিয়ে খেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে এই অপশক্তির লজ্জাজনক পতন হয়েছে। কিন্তু লজ্জাজনক পতনের পর পলাতক অবস্থায়ও তারা খাসলত বদলাতে পারেনি।
আজ সোমবার রাতে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কাফরুল দক্ষিণ থানা জামায়াত আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা পলাতক অবস্থায় ভারতে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে। আর এরাই নিকট অতীতে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরি উদ্যাপন করেছিল।’ তিনি বলেন, ‘মূলত এদের হাত থেকে কোনো শ্রেণি ও পেশার মানুষই রেহাই পায়নি। তারা জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির মুখোমুখি করে অপরাধ স্বীকারপূর্বক প্রাণভিক্ষা চাওয়ার মুখোমুখি করেছিল; কিন্তু তারা হিমালয়ের মতো অবিচল থেকে আমাদের সম্মানিত করেছেন। এতে দেশ ও জাতিও সম্মানিত হয়েছে।’
জামায়াতের আমির আরও বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী বাকশালীরা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। কিন্তু ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে তাদের সব চক্রান্ত মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে, যা আমরাও কল্পনা করিনি এবং তা পতিত স্বৈরাচারেরও কল্পনার বাইরে ছিল। সব কিছুই হয়েছে আল্লাহ তায়ালার পরিকল্পনামাফিক।
শফিকুর রহমান বলেন, মূলত আওয়ামী লীগ মানুষের রক্ত নিয়ে খেলেছে। তারা ২৮ অক্টোবর প্রকাশ্য রাজপথে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। এরপর পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে ৫৭ জন দেশপ্রেমী ও চৌকস সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করার পর জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের কথিত বিচারের নামে প্রহসন করে একের পর এক নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি আলেম-ওলামাসহ মাদ্রাসার ছাত্ররাও। কিন্তু ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এই অপশক্তির লজ্জাজনক পতন হয়েছে।
শফিকুর রহমান বলেন, ‘ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমেই আমরা দেশে মুক্ত পরিবেশ পেয়েছি।’ তিনি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব আত্মোৎসর্গকারীদের শহীদের মর্যাদা দেওয়ার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া, আহত ব্যক্তিদের প্রশান্তি ও সুস্থতা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের উত্তম ধৈর্য ধারণের তাওফিক কামনায় আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন।
কাফরুল দক্ষিণ থানা জামায়াতের আমির আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি আবু নাহিদের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ফখরুদ্দিন মানিক। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ, শাহ আলম তুহিন, শূরা সদস্য মঈন উদ্দিন প্রমুখ।