বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য-বিবৃতি সব ধরনের গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশে নিষেধাজ্ঞাসংক্রান্ত আগের সব নির্দেশনা প্রত্যাহার করেছেন হাইকোর্ট।
রিট আবেদনকারীর আরজির পরিপ্রেক্ষিতেই বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ–সংক্রান্ত রুল খারিজ করে দেন। ফলে তারেক রহমানের বক্তব্য-বিবৃতি প্রচারে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল।
আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকা অবস্থায় তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকী রিটটি করেন। পরদিন হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। তারেক রহমানের কোনো ধরনের বক্তব্য বা বিবৃতি সব ধরনের গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। গত বছরের আগস্টে রিট আবেদনকারী সম্পূরক আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৮ আগস্ট এক আদেশে হাইকোর্ট তারেক রহমানের বক্তব্য, বিবৃতি, অডিও ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব থেকে সরাতে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দেন। এখন রিট আবেদনকারী পক্ষ রিটটি আর না চালানোর কথা আদালতকে জানায়, যার পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিকেল চারটায় হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ বসেন।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকী আদালতে বলেন, তিনি রুল আর চালাতে চান না। বিষয়টি (রিট) তালিকা থেকে মুছে দেওয়ার প্রার্থনাও জানান তিনি। আদেশে আদালত বলেন, রিট আবেদনকারী নিজে আদালতে উপস্থিত হয়ে রুল চালাতে চান না বলে উল্লেখ করেছেন। রুল খারিজের আরজিও জানান তিনি। ফলে রুল খারিজ (ডিসচার্জ) করা হলো। এ রিটের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সব নির্দেশনাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হলো।
এ সময় আইনজীবী কায়সার কামাল উপস্থিত ছিলেন। আদেশ ঘোষণার পর আদালত বলেন, ‘কিছু কথা না বললেই নয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, তাঁরা যেন শহীদি মর্যাদা পান। যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁরা দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন, সেই প্রার্থনা করি। সেদিন (৫ আগস্ট) আমাদের এখানে (বাসভবনে) হামলা হয়, যে ভয়াবহতা—আমরা বাঁচব কি মরব, এমন একটা পরিস্থিতি। আমার সন্তানের সঙ্গে আর দেখা হবে না—মনে হয়েছে।’
আইনজীবী কায়সার কামালের উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘সে মুর্হূতে সুপ্রিম কোর্টের অনেক আইনজীবী এগিয়ে এসেছেন। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, আপনার মাধ্যমে সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনি অনেক আইনজীবীকে পাঠিয়েছেন। তাঁরা সে সময় ঢাল হিসেবে কাজ করেছেন।’ তখন কায়সার কামাল বলেন, ‘বার ও বেঞ্চ একে অপরের পরিপূরক। আইনজীবী হিসেবে আইনের শাসন সব সময় সমুন্নত রাখা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা আমাদের দায়িত্ব। অফিসার্স অব দ্য কোর্ট হিসেবে আদালতের মর্যাদা সমুন্নত রাখাও আমাদের দায়িত্ব। যখন শুনেছি, তখনই অনুরোধ করেছি আইনজীবী বন্ধুদের যেতে।’ আদালত বলেন, আইনজীবীদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।