‘হে গো বিশ্বাস নাই’, তাই কুমিল্লার সমাবেশে দুদিন আগেই তাঁরা

মোহাম্মদ কামাল , তিনি কুমিল্লা এসেছেন শুক্রবার
মোহাম্মদ কামাল , তিনি কুমিল্লা এসেছেন শুক্রবার

কুমিল্লায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে কোনো পরিবহন ধর্মঘট নেই। তবু চাঁদপুরের মুক্তার সরকার গত বৃহস্পতিবার রাতে, আর ফরিদগঞ্জ বাজারের ফার্মেসি দোকানি মোহাম্মদ কামাল সমাবেশে অংশ নিতে কুমিল্লা শহরে পৌঁছান গতকাল শুক্রবার সকালে।

বাস ধর্মঘট নেই, তবু কেন এত আগে এলেন?
জবাবে ফরিদগঞ্জ বাজারের ফার্মেসি দোকানি মোহাম্মদ কামাল বলেন, ‘হে গো (সরকারি দল আওয়ামী লীগ) কোনো বিশ্বাস নাই। যেকোনো সময় দিয়া (ধর্মঘট) দিত পারে।’

মোহাম্মদ কামাল বা মুক্তার সরকারের মতো এমন অনেকে সমাবেশে যোগদানের উদ্দেশ্যে এক-দুই দিন আগেই কুমিল্লা শহরে এসে পৌঁছেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই দূরের জেলা চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকার নেতা-কর্মী বা সাধারণ সমর্থক।
আজ শনিবার কুমিল্লা শহরের টাউন হল মাঠে সমাবেশ হবে। সকাল থেকেই ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মাঠে ঢুকছেন বিভিন্ন এলাকার নেতা-কর্মীরা। ভিড় এড়াতে অনেকে নিরাপদ জায়গায় সরে দাঁড়িয়েছেন। সকাল ১০টায় মাঠের এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা মোহাম্মদ কামাল ও মুক্তার সরকারের সঙ্গে কথা হয়।

গত বৃহস্পতিবার রাতে মুক্তার সরকার কুমিল্লা এসেছেন

পরিচয়ে মোহাম্মদ কামাল জানালেন, তাঁর বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭ নম্বর পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নে। তিনি জানান, বেশির ভাগ মানুষই এই সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়। প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম যে হারে বেড়ে চলেছে, তাতে গ্রামের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। মানুষ আর সহ্য করতে পারছে না।

মোহাম্মদ কামাল জানান, ১৯৯১ সাল থেকে তিনি বিএনপির একজন সমর্থক।
মাঠে মোহাম্মদ কামালের কাছাকাছি জায়গায় দাঁড়ানো মুক্তার সরকার জানান, তিনি এসেছেন চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা থেকে। নিজের পরিচয় দিয়ে মুক্তার জানান, তিনি উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন যুবদলের একটি ওয়ার্ড কমিটির সদস্য। তিনি কুমিল্লা শহরে এসেছেন বৃহস্পতিবার রাতে।

মুক্তার সরকার জানান, গত দুই রাত শহরের একটি নির্মাণ শেষ হওয়া বহুতল ভবনে ছিলেন। নির্মাণকাজ শেষ হলেও ভবনটি এখনো ভাড়া দেওয়া হয়নি। তাঁর অনুমান, ৫০০ লোক ওই ভবনে রাত্রি যাপন করেছেন। শীতে যাতে কষ্ট না হয়, সে জন্য তাঁদের কম দামি কম্বল কিনে দেওয়া হয়েছে। শহরের এমন অনেক বহুতল ভবনে বিএনপির অসংখ্য নেতা-কর্মীরা গত দুই দিন আশ্রয় নিয়েছেন।

বয়সে তরুণ মুক্তার সরকারের কাছে প্রশ্ন ছিল, এত আগে কেন এসেছেন, বাস-ট্রাক সবই তো চলছে। জবাবে মুক্তার বলেন, এই সরকারের বিশ্বাস নাই, কখন যে গাড়ি বন্ধ করে দেয়। তাই নেতারা বলেছেন, ‘যে যার মতো করে চলে যাও। সেখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।’