কোনো ধরনের গুজবে কান না দিয়ে আগামীকাল বুধবার চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে নেতা–কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করার চিন্তাভাবনা আছে। সমাবেশকে ঘিরে ইতিমধ্যে নেতা–কর্মীদের মধ্যে যে উৎসাহ–উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে, তা নিয়ে অংশগ্রহণ করতে হবে। ফান্দে পা দেওয়া যাবে না।’
জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে এই সমাবেশ আগামীকাল বেলা দুইটায় নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় এ সমাবেশের সিদ্ধান্ত হয়।
জনগণের জোয়ার যেখানে, সেখানে কেউ বাধা দিতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠের আগামীকাল বুধবারের জনসভা বাংলাদেশের আন্দোলনের ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে। জনগণের উৎসাহ–উদ্দীপনা দেখে এই মাঠকে জনসভার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। আজকে দেশের বেশির ভাগ মানুষ দুই বেলা অন্ন খেতে পারে না। টিসিবির পণ্য কিনতে মানুষের লম্বা লাইনে লেগে থাকে। পলোগ্রাউন্ড মাঠে লাখ লাখ মানুষ সমবেত হয়ে প্রতিবাদ জানাবেন সরকারের কাছে।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি সহিংসতার চেষ্টা করলে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিহত করবে বলে গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সমাবেশে আসা বিএনপির নেতা–কর্মীদের তা প্রতিহত করার কী প্রস্তুতি রয়েছে প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির নেতা–কর্মীরা লাঠি নিয়ে আসবেন না। তাঁরা একেকজন লাঠি, চায়নিজ রাইফেলের মতো শক্তিশালী। যাদের দুর্বলতা আছে, তারাই লাঠি নিয়ে মাঠে নামে। বিএনপির শক্তি জনগণ। আর তাদের শক্তি হলো অন্য জায়গায়। নিজেদের দুর্বলতা রয়েছে বলে তারা বিএনপিকে ভয় পায়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কোনো দল যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নেয়, বুঝে নিতে হবে তাদের পায়ের নিচে মাটি সরে গেছে। বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করবে।
নির্বাচন কমিশন নিয়ে বিএনপির কোনো বক্তব্য নেই জানান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে পারে না। আগে সরকার পদত্যাগ করবে। তারপর নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। সমাবেশকে ঘিরে গ্রেপ্তার কিংবা কোনো বাধা আছে কি না, প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেন, বাধা তো থাকবেই। উপেক্ষা করে সমাবেশে অংশ নিয়ে জনগণই প্রমাণ করবেন, তাঁদের দমানো যাবে না।
আমির খসরু বলেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ধৈর্য ধরে ধীরেসুস্থে কাজ করে যেতে হবে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় না বিএনপি। আজকে বিএনপির নেতা–কর্মীরা জ্বলে পুড়ে খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। সব চাপ উপেক্ষা করে তাঁরা সমাবেশ সফল করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক, নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন, সদস্যসচিব আবুল হাশেম, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম।