উন্নয়ন চাইলে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর ধ্বংস চাইলে বিএনপি-জামায়াতকে বেছে নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা সিভিল এভিয়েশন মাঠে আজ শনিবার এক জনসভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ এই জনসভার আয়োজন করে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবেই—এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে। জনগণ ভোট দিলে তিনি ক্ষমতায় থাকবেন, না দিলে নেই।
বিএনপি নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচন নষ্ট করতে চায়। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চায়। এ জন্য তিনি দেশবাসী এবং ঢাকাবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ভোটে আসবে কি আসবে না—সেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে। তারা যে নির্বাচন করবে, নেতাটা কে? এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া? খুনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি তারেক রহমান? আসলে তারা জানে নির্বাচনে এলে জিততে পারবে না।
আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেউ ক্ষমতায় এলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আপনারা কি বিএনপির কথায় নাচতে চান?’ এ সময় সবাই না, না বলে জবাব দেন। নৌকায় ভোট চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকা দেশের স্বাধীনতা দিয়েছে। নৌকা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে। নৌকায় ভোট দেওয়ার কারণেই পানির কষ্ট নেই। মানুষ সুখে আছে। এ সময় নৌকায় ভোট দেবেন কি না, উপস্থিত মানুষের ওয়াদা চান। জনসভায় আসা লোকজন ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু নিজে দিলে হবে না। পরিবার-পরিজন নিয়ে ভোট দিতে হবে।
বিএনপি বিদেশে ধরনা দিচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এতে কোনো কাজ হবে না। তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) আস্থা এ দেশের জনগণের ওপর। জনগণই তাঁর আপনজন।
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেন। তবে দেশের ভেতরে সিন্ডিকেটের কথাও বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মজুতকারী ও কালোবাজারিরা কোথায় আছে, তা আপনারা খুঁজে বের করবেন। সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। কেউ খাবার মজুত করবে আর জনগণ কষ্ট করবে, তা চলবে। কাউকে ছাড়া হবে না।’
মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান জনসভায় সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনা করেন উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান। কেন্দ্রীয় নেতারা এতে বক্তৃতা করেন।
সমাবেশ উপলক্ষে দুপুর থেকে রাজধানী ঢাকা, এর আশপাশের জেলা এবং ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সমাবেশে আসতে থাকেন। সমাবেশে আসা ব্যক্তিদের অধিকাংশ বাহারি রঙের টি–শার্ট, টুপি পরে আসেন। ব্যানার-ফেস্টুনে ছিল নির্বাচনী আমেজ। বিকেলের দিকে পুরো মাঠ ভরে বিমানবন্দর সড়কেও জনসভায় আসা মানুষের ভিড় দেখা যায়। বাস, ট্রাক সড়কের পাশে রাখার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়।