অনলাইন নিউজ পোর্টাল নেত্র নিউজের তথ্যচিত্র ‘আয়নাঘর’ দেশের মানুষের সামনে এক ভয়াবহ চিত্র হাজির করেছে বলে মনে করছে গণসংহতি আন্দোলন। দলটি বলছে, এই তথ্যচিত্রের ঘটনা একটা স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এর মাধ্যমে দেশে বিরাজমান চরম কর্তৃত্ববাদী শাসনের বাস্তবতা তুলে ধরা হয়ছে। এ বিষয়ে অবিলম্বে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা চেয়েছে দলটি।
সম্প্রতি নিখোঁজ অবস্থা থেকে ফিরে আসা দুই ব্যক্তির জবানবন্দি নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে নেত্র নিউজ। এ নিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল আজ মঙ্গলবার যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে গণসংহতি আন্দোলনের দুই নেতা অভিযোগ করেন, সরকার তার জবাবদিহিহীন ও কর্তৃত্ববাদী শাসন টিকিয়ে রাখতে সব বিরোধী মতকে দমন-পীড়ন ও হত্যা করছে। তারা স্থায়ীভাবে সব মত ও ভিন্নমতকে দমন করতে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এর ধারাবাহিকতায় সরকার রাজনৈতিক কর্মীসহ, সাংবাদিক, শিল্পী ও জনসমাজের নানা প্রতিনিধি ও অ্যাক্টিভিস্টকে বিভিন্ন মামলার জড়িয়ে রাতের আঁধারে গ্রেপ্তার করেছে। জামিন না দিয়ে মাসের পর মাস কারাগারে আটক রাখা হয়েছে তাঁদের। সরকার এই আইন বাতিলে জনদাবির কোনো তোয়াক্কা না করেই উল্টো বিভিন্ন নামে আরও দমনমূলক আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকার সর্ব অর্থেই মানবাধিকার পরিস্থিতি লঙ্ঘন করে চলেছে। এমনকি আইনবহির্ভূত দমন-পীড়নের সহযোগী কতিপয় ব্যক্তিকে রক্ষা করতে পুরো দেশ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বের দরবারে হেয়প্রতিপন্ন করতে কুণ্ঠাবোধ করছে না। তাদের কাছে দেশের নাগরিকদের মানবাধিকারের ন্যূনতম নিশ্চয়তা নেই। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে দেশে শাসনব্যবস্থা বদলানোর সংগ্রাম গড়ে তুলতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
গণসংহতি আন্দোলনের দুই নেতার অভিযোগ, জনসমর্থন বা জনমত দিয়ে নয়, সরকার একমাত্র ভয় ও স্থায়ী আতঙ্ক তৈরি করেই রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। ভোটবিহীন দুই দুটি তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার পর এখন সামনের নির্বাচন নিয়েও নানা ছক কষছে। এই ছক বাস্তবায়নের জন্য তারা পুরো দেশে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। জুলুমের চূড়ান্ত হিসেবে গুম-খুন হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের অসহায় সদস্যদের মুখ খুলতে পর্যন্ত বাধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।