ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আজকে আমাদের লড়তে হবে একসঙ্গে। মান-অভিমান সব ভুলে যেতে হবে। আজ ওই পশুশক্তি যদি আরও প্রশ্রয় পায়, তাহলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়তে হবে।’
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রবিরোধী এবং অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে মতবিনিময় সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। শেখ হাসিনাই এই মুহূর্তে আমাদের অস্তিত্বের কান্ডারি।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গে টেনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জনগণের প্রতিরোধের মুখে পদ্মা সেতুতে আক্রমণ করতে পারেনি। কিন্তু সফল হয়েছে সেতু ভবন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বিটিভি ভবন, মেট্রোরেলে আক্রমণ করতে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগুন–সন্ত্রাসের ধ্বংসলীলা আবার শুরু হয়েছে।’ এ ‘নারকীয় তাণ্ডবের’ বিরুদ্ধে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ার আহ্বান জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
জিয়াউর রহমান একজন ভণ্ড মুখোশধারী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন অভিযোগ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এই মানুষগুলোকে আমাদের জানতে হবে। এদের ব্যাকগ্রাউন্ড জানলেই এদের উত্তরসূরিদের কর্মকাণ্ডের আসল চেহারা উন্মোচিত হবে, যা এখন উন্মোচিত হয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেতু ভবন সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ধারক-বাহক যে বিটিভি, সেই বিটিভিকে ভস্মীভূত করা হয়েছে। এই অপশক্তিকে যেকোনো মূল্যে আমাদের প্রতিরোধ করতে হবে। শেখ হাসিনা আজকে জাতীয় জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছেন।’
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনসহ ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
তোপের মুখে কাদের
মূলত আজকের কর্মসূচি ছিল দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সাবেক ছাত্রনেতাদের মতবিনিময়। কিন্তু বরাবরের মতো ওবায়দুল কাদের আমন্ত্রিত নেতাদের কথা না শুনে সংবাদ সম্মেলনের মতো করে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে কর্মসূচি শেষ করতে চেয়েছিলেন। এ জন্য ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। হট্টগোল শুরু হলে কর্মসূচি শেষ না করেই তড়িঘড়ি সভাস্থল ত্যাগ করেন দলের এই শীর্ষ নেতা।
বৈঠক উপস্থিত একাধিক ছাত্রনেতা জানান, সাবেক ছাত্রনেতাদের মতবিনিময় সভার জন্য ডেকে গণমাধ্যমের উদ্দেশে কথা বলা শুরু করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা হট্টগোল শুরু করেন। তাঁরা ওবায়দুল কাদেরকে লক্ষ্য করে বলেন, তাঁদের ডেকেছেন, আগে তাঁদের কথা শুনবেন, আলোচনা করবেন। সেটি না করে কেন গণমাধ্যমের সামনে কথা বলা শুরু করেছেন?
হট্টগোলের একপর্যায়ে কথা বলা শেষ না করে ওবায়দুল কাদের তাঁর অফিস কক্ষে চলে যান। তখন সাবেক নেতারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের নিচতলায় ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেন তাঁরা। কোনো কোনো সাবেক নেতা গণমাধ্যমকর্মীদেরও গালাগাল করেন।