বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়াপল্টনে আয়োজিত মহাসমাবেশে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ২৮ জুলাই
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়াপল্টনে আয়োজিত মহাসমাবেশে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ২৮ জুলাই

এখনো সময় আছে, ভালো চাইলে পদত্যাগ করুন

আবারও বর্তমান সরকারের পদত্যাগ দাবি করলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি নিজেদের ভালো চান, এখনো সময় আছে। আমাদের এক দফা দাবি, সেটা মেনে নিন আর পদত্যাগ করুন। কারণ, সমগ্র বাংলাদেশ আজ জেগে উঠেছে। যদি পদত্যাগ না করেন, এ দেশের মানুষ আপনাদের পতন করেই ছাড়বে।’

আজ শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। বর্তমান সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এ মহাসমাবেশ করে বিএনপি।

মহাসমাবেশ থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আগামীকাল শনিবার রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখগুলোয় অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিএনপির মহাসমাবেশ শেষ হয়।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, সারা দেশ থেকে গণতন্ত্রকামী সাধারণ মানুষ, ছাত্র-যুবসমাজ, নারী, প্রবীণ মানুষ আজকের এ মহাসমাবেশে উপস্থিত হয়েছে। এই মহাসমাবেশ বাংলাদেশের পরিবর্তনের মাইলফলক।

নয়াপল্টনে আয়োজিত মহাসমাবেশে যোগ দেওয়া বিএনপির নেতাকর্মীদের একাংশ। ঢাকা, ২৮ জুলাই

প্রশাসনকে হুঁশিয়ার করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে বেআইনিভাবে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না। সংবিধান অনুযায়ী, আইনের শাসন মেনে কাজ করেন। গ্রেপ্তার, হয়রানি বন্ধ করুন, কারাগারে যাঁদের আটক রেখেছেন, তাঁদের মুক্তি দিন।’ তিনি অভিযোগ করেন, সাধারণ মানুষের হয়ে যিনি আন্দোলন–সংগ্রাম করেন, সেই তারেক রহমানকে বেআইনিভাবে সাজা দিয়ে, অত্যাচার করে এ দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে অবৈধভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করেছে।

মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, এই বেআইনি, অসাংবিধানিক, ভোট চোর আওয়ামী লীগ সরকার জনগণকে বোকা বানিয়ে বারবার ক্ষমতায় থাকতে চায়। কিন্তু দেশের মানুষ এই সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে। তারা একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ দেখতে চায়। তিনি আরও বলেন, এই গণবিরোধী, অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকার সব মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। সাধারণ মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেন না। এ জন্য মানুষ ভোটেও অংশগ্রহণ করেন না। জনগণের এখন নির্বাচনব্যবস্থার ওপর কোনো আস্থা নেই।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকারের পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন করছি। এ আন্দোলনে শরিক ৩৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে একমত হয়েছি যে এই অবৈধ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। কারণ, তাদের অধীনে নির্বাচন হলে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারবেন না।’ তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই অবৈধ সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার কথা, দফা এক, দাবি এক—এই সরকারের পদত্যাগ।’

মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাষ্ট্রযন্ত্র—সবকিছুকে দলীয়করণ করা হয়েছে। এ দেশের জনগণ আর এটা মেনে নেবেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা একা নই, আন্তর্জাতিক বিশ্বও দেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়।’

মহাসমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা থেকে শুরু করে সারা দেশ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মী ও সমর্থকেরা অংশগ্রহণ করেন।