মুফতি মো. রুহুল আমিন
মুফতি মো. রুহুল আমিন

মুফতি রুহুল আমীনকে আলেম সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ঘোষণা গোপালগঞ্জ উলামা পরিষদের

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সাবেক খতিব মুফতি রুহুল আমীনকে আলেম সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ঘোষণা করেছে গোপালগঞ্জ উলামা পরিষদ। বায়তুল মোকাররম মসজিদে সম্প্রতি সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় তাঁকে আলেম সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ঘোষণা করা হয়।

আজ বুধবার বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো গোপালগঞ্জ উলামা পরিষদের এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শরিফ আনিসুর রহমানের নামে পাঠানো বিবৃতিটিতে মাওলানা আলী আহমাদ, বেলায়েত হুসাইন, হাফিজুর রহমান, মাসউদুর রহমানসহ গোপালগঞ্জের ৩৩ জন আলেমের নাম রয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মুফতি রুহুল আমীন ঐতিহ্যবাহী গওহরডাঙা মাদ্রাসা ও ছদর সাহেব নামে পরিচিত তাঁর পিতা প্রয়াত শামছুল হক ফরিদপুরীর নীতি-আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। এমনকি জনগণ ও আলেম সমাজ থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এ পরিস্থিতিতে রুহুল আমীন তাঁর পিতার ‘আমানত’ গওহরডাঙা মাদ্রাসার মুহতামিম থাকতে পারেন কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর বায়তুল মোকাররম মসজিদে মুফতি রুহুল আমীনের জুমার নামাজ পড়ানোকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর পর রুহুল আমীনকে খতিব পদ থেকে অপসারণ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

এ ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বিবৃতিতে বলা হয়, ইমামতি করাকে কেন্দ্র করে মসজিদের অভ্যন্তরে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ‘জঘন্য অপরাধ’। এ ঘটনায় জাতীয় মসজিদের পবিত্রতা ক্ষুণ্ন হয়েছে ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ হয়েছে। গোপালগঞ্জ উলামা পরিষদ এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছে।

মুফতি রুহুল আমীনের এসব কর্মকাণ্ডের দায়ভার আলেম সমাজ বহন করবে না উল্লেখ করে উলামা পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে মুফতি রুহুল আমীন ও তাঁর দোসরেরা ‘কল্পিত’ প্রোগ্রামের কথা বলে গওহরডাঙা মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের বায়তুল মোকাররম মসজিদে নিয়ে প্রতারণা করেছেন। গওহরডাঙা মাদ্রাসা ও গওহরডাঙা মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কোমলমতি ছাত্ররা আল্লামা শাসছুল হক ফরিদপুরীর (রহ.) ও জনগণের আমানত। তিনি তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় খতিব পদ রক্ষায় গওহরডাঙা মাদ্রাসার ছাত্র ও শিক্ষা বোর্ডকে ব্যবহার করে আমানতের খিয়ানত করেছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড কওমি মাদ্রাসা, গওহরডাঙা ও পূর্বসূরিদের নীতি-আদর্শ পরিপন্থী। অতএব তিনি কওমি মাদ্রাসা, গওহরডাঙা ও ছদর সাহেব হুজুর (রহ.)–এর নীতি-আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন।

আজ বিবৃতি দেওয়ার আগে বায়তুল মোকাররমের ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার উলামা পরিষদ জরুরি পরামর্শ সভা করে। তাতে সাধারণ সম্পাদক মুফতি শুয়াইব ইবরাহীমের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন সভাপতি মুফতি মাহমুদুল হাসান।