তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি এখন চূড়ান্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের রূপ ধারণ করছে। তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই আসে না।
আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) প্রকাশিত ‘সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু ৭ম খণ্ড’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ এবং কর্মকর্তা ও গবেষকেরা মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি এখন আর রাজনৈতিক দলে নাই, বিএনপি এখন সন্ত্রাসীদের দলে। যারা রাষ্ট্রের বেদিমূলে আঘাত হানে, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে যারা হামলা চালায় অর্থাৎ বিচারব্যবস্থার ওপর হামলা চালায়, যারা হাসপাতালে হামলা চালিয়ে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে দেয়, ভাঙচুর করে, যারা পুলিশ হত্যা করে, তারা কখনো রাজনৈতিক দল হতে পারে না। তাই বিএনপি এখন কোনো রাজনৈতিক দল নয়, তারেকের নেতৃত্বে বিএনপি এখন চূড়ান্ত সন্ত্রাসী সংগঠনের রূপ ধারণ করছে। তাদের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই আসে না।’
কাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আলোচনা করতে পারে, সে প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, আলোচনা হবে অবশ্যই। আওয়ামী লীগ যে কারও সঙ্গে আলোচনা করতে পারে রাজনৈতিক দল হিসেবে। যারা গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে, যারা দেশের সংবিধান মানে, আইনব্যবস্থাকে মানে, বিচারব্যবস্থাকে মানে, তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২৮ অক্টোবর বিএনপি সারা দেশে হরতাল ডেকে সেই হরতালকে সফল করার জন্য সেই আগের পুরোনো ঘৃণ্য আগুন–সন্ত্রাসের তাণ্ডবে ফিরে গেছে। আপনাদের মনে আছে, ২০১৩, ’১৪, ’১৫ সালে কীভাবে গাড়িচালকদের হত্যা করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতেও সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর ডেমরায় একটি বাস দাঁড়িয়েছিল, বাসের হেলপার ঘুমাচ্ছিল, সেই বাসে তারা আগুন দিয়েছে। সে আগুনে বাস পুড়ে গেছে, হেলপারও পুড়ে গেছে। বিএনপির আবার সেই জঘন্য নৃশংসতা।’
নৈরাজ্য ছড়িয়ে দিতে অবরোধ ডেকেছে
মঙ্গলবার থেকে বিএনপির তিন দিনের অবরোধ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা নৈরাজ্য সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই তিন দিনের অবরোধ ডেকেছে। তারা জানে তাদের পক্ষে দেশে অবরোধ কার্যকর করা সম্ভব নয়। কিন্তু চোরাগোপ্তা হামলা, নৈরাজ্য সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে তারা অবরোধ ডেকেছে। যারা মানুষের ও সরকারি সম্পত্তিতে আগুন দেবে, ধ্বংস করবে, তাদের বিরুদ্ধে জনগণ যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এই নিন্দা সহিংসতা বন্ধ করার ক্ষেত্রে সহায়ক
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি, তাদের এই নিন্দা সহিংসতা বন্ধ করার ক্ষেত্রে সহায়ক। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে তারা ভিসানীতি নিয়েও ভাববে। আমরা আশা করব, যারা হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, পুলিশ হত্যা করেছে, পুলিশ আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছে, জনগণের সম্পত্তি পুড়িয়েছে, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সেই ব্যবস্থা তারা গ্রহণ করবে, আমরা দেখার অপেক্ষায় আছি।’
খালেদা জিয়া আগের তুলনায় ভালো আছেন
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলছিল, খালেদা জিয়াকে বিদেশ না নিলে তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি, তাঁকে রক্ষা করা যাবে না। আমেরিকান যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকেরা এসে এখন বলেছেন, খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি আগের তুলনায় ভালো আছেন। এ জন্য আমিও স্বস্তি প্রকাশ করছি এবং প্রার্থনা করি, তিনি যেন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন। মার্কিন চিকিৎসকদের আসার ব্যবস্থা সরকারই করে দিয়েছে। বিএনপির বক্তব্যে প্রমাণিত হয়, তারা খালেদা জিয়াকে রাজনীতির ঘুঁটি বানিয়েছে।’