মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এখন কাকে নিয়ে বিএনপি খেলবে, সেই প্রশ্ন করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মহানগর ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের যৌথ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যাকে নিয়ে আপনারা (বিএনপি) আমাদের কত রঙ্গ দেখালেন, কত জাদু দেখাইলেন, সেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাহেব, তিনি অভিনন্দন জানিয়েছেন। এখন কাকে নিয়ে খেলবেন? কাকে নিয়ে আর এটা করবেন, ওটা করবেন? এখন স্বপ্ন দেখছেন কখন বিশাল নিষেধাজ্ঞা, কখন ভিসা নীতি প্রয়োগ হবে, কখন নিষেধাজ্ঞা আসবে। রোজ কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, ধৈর্য ধরুন।’
সরকার পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় এসেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সময় আছে পাঁচ বছর। পাঁচ বছরের মধ্যে আর উল্টাপাল্টা বলে কোনো লাভ নেই। অপেক্ষা করতে হবে। পাঁচ বছর পর আবার ১০ ডিসেম্বর, আবার ২৮ অক্টোবরের অপেক্ষা করুন। নির্বাচনের ট্রেন বন্ধ হয়ে গেছে। পাঁচ বছর পর আবার চালু হবে।’
দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা টিআইবির বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটা কি পাতানো নির্বাচন ছিল? আপনার কি মনে হয়? পৃথিবীর নামীদামি গণতান্ত্রিক দেশগুলো বাংলাদেশের এ নির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু হয়েছে, এ কথা বলে প্রশংসা করে কেন? আমাদের আশপাশে কেউ বাকি নেই। পাকিস্তানের হাইকমিশন পর্যন্ত আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।’
প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হয়েছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিরোধী দলের নির্বাচন বর্জন করায় নতুন রণকৌশল নিতে হয়েছে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য বড় অংশ। জনগণের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে রণকৌশল নিতে হয়েছে, যার সোনালি ফসল ঘরে তুলেছে আওয়ামী লীগ। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে এখন অনেকে অনেক কথাই বলবে।
বিএনপির আস্ফালন কোথায় গেল—এ প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছে। অনেক দেশ পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে। বিএনপির বর্জন করা ছাড়া এ নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো কথা বলার নেই। ভালো নির্বাচন হয়েছে, সে প্রশংসা আসছে। কেবল বিএনপি নির্বাচনকে গ্রহণ করতে পারছে না। তারা এখন বলছে সংসদ অবৈধ।
আওয়ামী লীগকে নির্বাচন শেখাতে হবে না মন্তব্য করে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেছে। সরকারি দলের প্রার্থীকেও শোকজ করেছে কমিশন। গণতন্ত্রের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকার যেদিন গঠিত হয়েছে, তার পেছনের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সাংবিধানিক এ বিধানেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিএনপি নির্বাচনে এলে হেরে যেত, এমন কথা বলে ওবায়দুল কাদের বলেন, চরম হতাশাগ্রস্ত শিবিরে পরিণত হয়েছে বিএনপি। যে দলের মধ্যে গণতন্ত্র নেই, সেই দল কীভাবে দেশের মানুষকে গণতন্ত্র দেবে। এই বিএনপি অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে নেতা বানিয়েছে। দুর্নীতির সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানাতে বিএনপি তাদের সাত ধারা বাতিল করেছে।
বিএনপি নিজেদের কার্যালয়ে নিজেরাই তালা মেরেছিল বলে মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তারা বলে, সরকার তাদের অফিসে তালা লাগিয়েছে। আবার তাদের অফিসের তালা তারাই ভেঙেছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও দীপু মনি; সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।